২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ১২:২৭:২৬ পূর্বাহ্ন
কয়েকগুন সম্পদ ও আয় বেড়েছে আয়েন উদ্দিনের
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১২-২০২৩
কয়েকগুন সম্পদ ও আয় বেড়েছে আয়েন উদ্দিনের

রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন। এই আসনে টানা দুইবারের সাংসদ তিনি। ২০১৩ সালে প্রথমবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে এই আসনে জয়লাভ করেন তিনি। তবে এবার আর এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পাননি তিনি। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আসাদুজ্জামান আসাদ। এই আসনে সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় তার বেড়েছে আয় ও সম্পদ।


নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৩ সালে আয়েন উদ্দিনের বাৎসরিক আয় ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে নির্বাচনী হলফনামায় তার আয় দেখান ৩২ লাখ ৮৫ হাজার ৫০৬ টাকা। ২০২৩ সালে আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ লাখ ৩ হাজার ৭৬৩ টাকা। তার আয় বেড়েছে শতকরা ২৫ দশমিক।


এছাড়াও গতবার হলফনামায় ছিল ৩ কাটা জমি। এবার হলফনামায় দেখানো হয়েছে ৭৭ বিঘা জমি। এছাড়াও তিনি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন ৭৭ দশমিক ৯৩ একর জমিতে। এছাড়াও দেখানো হয়েছে রাজধানীর পূর্বাঞ্চলে ৩ কাটা জমি যার মূল্য ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৮৮০ টাকা। স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট যার মূল্য ৩৫ লাখ ১২ হাজার ৭৭০ টাকা। রাজশাহী নগরীর উপশহরে আরও একটি ফ্ল্যাট আছে স্ত্রীর নামে যার মূল্য ৫০ লাখ ৪ হাজার ৮২৫ টাকা।


তার কাছে নগদ টাকা আছে ৩ লাখ। স্ত্রীর কাছে আছে ১৮ লাখ ২৯ হাজার ৯১৯ টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় তার স্ত্রীর কাছে নগদ টাকা ছিল ১ লাখ। নিজের নামে না থাকলেও স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ৮৯ হাজার ৪৭৩ টাকা। স্ত্রীর নামে আছে ১০ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ টাকার ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র।


এছাড়াও তিনি তার ব্যবহৃত গাড়ির মূল্য দেখিয়েছেন ৫০ লাখ ৭৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। ২০ তোলা স্বর্ণ যার মূল্য ২ লাখ টাকা। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে ৬ লাখ টাকার ও আসবাবপত্র আছে ৬ লাখ টাকার। তার স্ত্রীর নামেও আছে ২০ তোলা স্বর্ণ যার মূল্য লেখা নাই।


এ বিষয়ে এমপি আয়েন উদ্দিন আয়েন উদ্দিন বলেন, আমার নামে যে জমি আছে তা কিছু পৈত্রিক ও কেনা জমি। স্ত্রীর নামে ফ্ল্যাটগুলোও তাই। আমি দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসা করি। লভ্যাংশ থেকে এগুলো কিনেছি। আমার মাছের ব্যবসা আছে। কৃষি জমি আছে। এগুলো আমার ব্যবসা।


রাজশাহী-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। নির্বাচনে প্রথম এই প্রার্থীর পেশা ব্যবসা। ঠিকাদারী থেকে বছরে আয় সাড়ে ৭ লাখ টাকা। এছাড়া মাছচাষে আয় ১৮ লাখ টাকা। হাতে নগদ টাকা আছে ৫০ হাজার। তার তিনটি ব্যাংকে জমা আছে ৩ হাজার ২০৬ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ৩১ হাজার ৭৯০ টাকা। এছাড়াও মেয়ে ও ছেলের নামে ৩ লাখ ৪ হাজার ৬৮৮ টাকা। এছাড়াও একটি ব্যক্তিগত কারের মূল্য দেখানো হয়েছে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।


তার স্বর্ণ আছে ২ লাখ টাকার। এছাড়াও প্রথম স্ত্রীর নামে স্বর্ণ আছে ১৫ ভরি ও দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে স্বর্ণ আছে ১০ ভরি। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে দেড় লাখ টাকার। আসবাবপত্র আছে এক লাখ ২০ হাজার টাকার।


এছাড়াও বারনই আবাসিক এলাকায় কিস্তিতে নেওয়া একটি প্লট আছে তার নামে। যার মূল্য ২০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। একটি ভবন আছে যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১১ লাখ টাকা। লীজ নেওয়া মৎস্য খামারের মূল্য দেওয়া হয়েছে ৩০ লাখ টাকা।


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী মতিউর রহমান মন্টু পেশায় আইনজীবি। এছাড়াও তার অন্যান্য ব্যাবসা আছে। এমএ ও এলএলবি পাশ এই শিক্ষার্থীর বছরে আয় ৪ লাখ টাকা। ব্যবসায় পুঁজি আছে ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮৭ টাকা। তার একটি মোটরসাইকেল আছে যার মূল্য ২০ হাজার টাকা। স্বর্ণের মূল্য দেখিয়েছেন তিনি ২০ হাজার টাকা। এছাড়াও সোফাসেট যার মূল্য দেখানো হয়েছে ২৫ হাজার টাকা।


অকৃষি জমি আছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৮৫০ টাকা। তার স্ত্রীর নামে আছে দুই বিঘা জমি। যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৫৬ হাজার ১৬০ টাকা। ব্যাংকে ঋণ আছে ১৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪২৮ টাকা। তার একটি মামলাও আছে যা বিচারাধীন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।


জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুস সালামের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাশ। পেশায় ব্যবসায়ী এই প্রার্থীর বছরে আয় ৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে কৃষি ও নিজস্ব ব্যবসার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। তার নগদ টাকা আছে ৫ লাখ ও ব্যাংকে আছে ৫ হাজার টাকা। স্ত্রীর আছে ১০ ভরি স্বর্ণ। আসবাবপত্র ইলেট্রনিক্স সামগ্রী আছে ২ লাখ টাকার। স্ত্রীর নামে আছে ১ লাখ টাকার। জমি আছে ৬ বিঘা ও মাছের খামার আছে যৌথভাবে ৪ লাখ টাকার। একটি মামলা থাকলেও তিনি খালাস পেয়েছেন।


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের প্রার্থী বজলুর রহমান স্বশিক্ষিত। পেশায় ব্যবসায়ী এই প্রার্থীর বছরের আয় ৫ লাখ টাকা। নগদ টাকা আছে ২ লাখ। একটি মোটরসাইকেল ৭৩ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র আছে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে আড়াই লাখ টাকার। এক একর ধানের জমি আচে যার মূল্য দেখিয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তার নামে একটি বাড়ি আছে যার মূল্য দেওয়া হয়েছে ২ লাখ টাকা।


ন্যাশনাল পিপলস প্রার্থী সইবুর রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ। কৃষি ও ব্যবসা থেকে তার বছরে আয় ২ লাখ টাকা। নগদ টাকা আছে ১০ হাজার ও ব্যাংকে আছে ৫০ হাজার টাকা। জমি আছে দুই বিঘা। এছাড়া আয় ও অন্যান্য সম্পদ তিনি দেখাননি।


জাতীয় পার্টির আরেক প্রার্থী সোলাইমান হোসেন শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বশিক্ষিত। ব্যবসা থেকে বছরে আয় ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। নগদ টাকা আছে ৫ লাখ ও ব্যাংকে আছে ৫০ হাজার টাকা। তিন লাখ টাকার আসবাব ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে তার। তার দেড় বিঘা জমি। যার মূল্য দেখিয়েছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা।


শেয়ার করুন