শরিয়াভিত্তিক পাঁচ ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, বরং চলতি হিসাবের স্থিতির বিষয়ে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর ২০ কর্মদিবসের মধ্যে চলতি হিসাবের স্থিতি সমন্বয় না করলে এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।
গতকাল রবিবার মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে এই পাঁচ ব্যাংককে বলা হয়—চিঠি পাওয়ার ২০ কর্মদিবসের মধ্যে আবশ্যিকভাবে চলতি হিসাবের ঋণাত্মক স্থিতি সমন্ব্বয়ের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই হিসাব সমন্বয়ে ব্যর্থ হলে পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আপনাদের সম্পাদিত ‘ক্লিয়ারিং সেটলমেন্টের জন্য নির্ধারিত হিসাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণ’ চুক্তি মোতাবেক সব বা নির্দিষ্ট কোনো ক্লিয়ারিং প্ল্যাটফরম থেকে বিরত রাখা হবে।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেজবাউল হক বলেন, ‘কোনো ইসলামী ব্যাংককে আমাদের পেমেন্ট সিস্টেম থেকে বিচ্ছিন্ন করা বা বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তাদের চলতি হিসাব সমন্বয় করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সেখানে সতর্কতামূলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পেমেন্ট সিস্টেম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া চিঠির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বলা হয়েছে। মতিঝিল অফিস থেকে তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে চলতি হিসাবের ঘাটতি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পূরণ করার জন্য।
এটি স্বাভাবিক, বহমান প্রক্রিয়া। যেকোনো ব্যাংকের যখন এ রকম অবস্থা হয় তখন তাদের অবহিত করা আমাদের দায়িত্ব। সেটাই করা হয়েছে। সেই চিঠিতে, আমরা যেমন বলি—অন্যথায় আপনাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, এ রকম সতর্কতামূলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যেভাবে উপস্থাপন (পত্রিকায়) করা হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।
এটা আমাদের আপত্তির জায়গা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিবদ্ধ দায়িত্ব আছে। সেই জায়গা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করে। এটা কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাংকের জন্য নয়। এটা যেকোনো পর্যায়ে, যেকোনো সদস্যের ক্ষেত্রে হতে পারে। কোনো ধরনের সমস্যার লক্ষণ সৃষ্টি হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালন করবে।’
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, রিজার্ভে ১.৩১ বিলিয়ন ডলার এই মাসে যুক্ত হয়েছে। আইএমএফের ৬৮৯ মিলিয়ন এবং এডিবির ৪০০ মিলিয়ন। এই দুটি অংশের ডলার যুক্ত হওয়ার পরে গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫.৮২ বিলিয়ন ডলার, বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী যা ২০.৪১ বিলিয়ন ডলার।