২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৩:০১:৫১ অপরাহ্ন
ভোটের মাঠে গানের তারা ডলি সায়ন্তনী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১২-২০২৩
ভোটের মাঠে গানের তারা ডলি সায়ন্তনী

‘কোন-বা পথে নিতাইগঞ্জ যাই’—খালি গলায় গাইছেন কেউ। নারীকণ্ঠ। বাঁধেরহাটে সাপ্তাহিক হাটবারে গমগম করছে মানুষ। এত ভিড়ে কে গান গাইছেন? উৎস খুঁজতে চোখে পড়ল হাটের মাঝখানে মানুষের জটলা। সামনে যেতেই দেখা মিলল শিল্পীর। এ যে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী! পাবনার সুজানগর উপজেলার প্রত্যন্ত বাঁধেরহাটে গান গাইছেন! তা-ও খালি গলায়!


জটলার অনেকের প্রিয় শিল্পী ডলি। টেলিভিশনে তাঁকে গান গাইতে দেখলেও সামনে থেকে এই প্রথম। তাঁদের অনুরোধেই গাইছেন। ফলে উৎসাহও ব্যাপক। কেউ কেউ সেলফিও তুললেন। গান শেষে নিজের জন্য ভোট চাইলেন ডলি সায়ন্তনী। এই চিত্র গত রোববারের। বেলা দুইটার পর প্রায় আধা ঘণ্টা সেখানে গণসংযোগ করলেন। আশ্বাস পেলেন ভোটের।


প্রচার শুরুর পর থেকে ডলি সায়ন্তনী যেখানেই যাচ্ছেন, ঘিরে ধরা মানুষের অনুরোধে দুই কলি গান শোনাতে হচ্ছে। গানের জগতের এই তারা নেমেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে। পাবনা-২ (সুজানগর ও বেড়া উপজেলার আংশিক) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী তিনি। প্রতীক নোঙর। গ্রামে-গঞ্জে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন। তাঁকে কাছে পেলেই ঘিরে ধরছে মানুষ। তৈরি হচ্ছে উৎসবের আমেজ। নৌকার প্রার্থীর বাইরে ভোটারদের আগ্রহও আছে তাঁকে নিয়ে। 


ডলিকে কাছে পেয়ে বাঁধেরহাটে মাছ বিক্রেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আপনি আমাদের এলাকার মানুষ। আপনাকে পছন্দ। ভোট আপনাকেই দেব।’ শিল্পীর সঙ্গে সেলফি তুলে আরিফুল ইসলাম নামের এক যুবক বলেন, ‘টিভির পর্দায় অনেক দেখেছি। কোনো দিন কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়নি। তাই ছবি তোলার সুযোগ হাতছাড়া করলাম না।’ সালাম দিয়ে দোয়া ও ভোট চাওয়ায় আপ্লুত ফুটপাতে সবজি বিক্রেতা আজাহার আলী।


চা-দোকানি আবু হোসেন বললেন, ‘ভোট কি দিবের যাবের পারবোনে।’ জবাবে ডলি বললেন, ‘ভোট সুষ্ঠু হবে, নিরপেক্ষ হবে। ভয়ের কারণ নেই। ভোটকেন্দ্রে যাবেন।’


বাঁধেরহাট থেকে ডলি গেলেন কাজিরহাট ফেরিঘাটে। সেখানে এক মুদিদোকানে মাইকে বাজছিল ডলির ‘রঙ চটা জিনসের প্যান্ট পরা’ গানটি। দোকানি শান্ত হোসেন বললেন, ‘আমি তাঁর ভক্ত। তিনি ভোটে দাঁড়াইছেন। তাই তাঁর জন্য গান বাজাচ্ছি।’


দুপুর ১২টার দিকে আমিনপুর থানার রানীনগর ইউনিয়নের বাঘলপুর বেলতলা থেকে সেদিন প্রচার শুরু করেন ডলি সায়ন্তনী। এরপর ভাটিকয়া গ্রাম থেকে বাঁধেরহাট। কাজিরহাট থেকে রূপপুর গুচ্ছগ্রামে গণসংযোগের পর শেষ হয় সেদিনের প্রচার। গানের মঞ্চ থেকে ভোটের মাঠে এসে চ্যালেঞ্জ কেমন দেখছেন—ফেরার পথে এ প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘চ্যালেঞ্জ খুব একটা মনে হয়নি। কারণ, আমি এই এলাকারই সন্তান। এখানকার মাটি, মানুষ আমার চেনা আপনজন। এত দিন গান দিয়ে মানুষের মন জয় করেছি, এবার ভোটের মাঠেও তাঁদের মন জয় করতে পারব বলে বিশ্বাস করি। ভোটারদের বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। তাঁদের অনুরোধে গানের কলি শোনাতে হচ্ছে। বিষয়টি আমিও উপভোগ করছি।’


প্রতিশ্রুতির বিষয়ে ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘আমার অনেক পরিকল্পনা আছে। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্যের জন্য কিছু এলাকায় সেতু নির্মাণ, পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার, নারীদের কর্মসংস্থান, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়নসহ অনেক কাজ করতে চাই। এ জন্য ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। সবার ভালোবাসা পেলে বিজয়ী হব ইনশা আল্লাহ।’


শেয়ার করুন