পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ, ছেলে রাহীব সাফওয়ান সারাফাত চৌধুরী এবং আরও একাধিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১ হাজার ৬১৩ কোটি ৬৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকার মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করেছে সিআইডি।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও তার সহযোগী ডক্টর হাসান তাহের ইমাম ২০০৮ সালে রেইস ম্যানেজমেন্ট পিসিএল নামে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ১০টি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডে সম্পদ পরিচালনার দায়িত্ব পায়। অভিযুক্তরা এসব ফান্ডকে অবৈধ ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছেন।
অভিযুক্তরা ফান্ডের অর্থ দিয়ে পদ্মা ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় ও পরিচালক পদ লাভ করেন। এছাড়া, কৌশলে আঞ্জুমান আরা শহীদকে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক বানানো হয়। এরপর তারা মাল্টি সিকিউরিটিজ নামক ব্রোকার হাউজ ক্রয় করে ফান্ডের অর্থ হাতিয়ে নেন এবং পদ্মা ব্যাংকের অর্থ দিয়ে স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ফান্ডে বিনিয়োগ করেন।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অভিযুক্তরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব খোলা, রাজউক থেকে প্লট অর্জন, বিদেশে অর্থ পাচারসহ জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ লেনদেন করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সিআইডি মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অনুসন্ধান শুরু করে।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অভিযুক্তদের নামে ৭৮টি ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হয়। মোট জমা প্রায় ১৮০৯.৭৫ কোটি টাকা এবং উত্তোলন প্রায় ১৮০৫.৫৮ কোটি টাকা। চৌধুরী নাফিস সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলে মিলিয়ে ২১টি হিসাব চলমান রয়েছে, যার বর্তমান স্থিতি মাত্র ২৯.২১ লাখ টাকা। এছাড়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে ৩ রুমের ফ্ল্যাট ও ৫ রুমের ভিলা রয়েছে এবং সিঙ্গাপুরে হাসান তাহের ইমামের মালিকানাধীন কোম্পানির ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করা হয়।
সিআইডি এই তথ্য বিশ্লেষণ করে গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) গুলশান থানায় মানিলন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করে।

