দেশের রাজনীতিতে সংকটটা তৈরি হয়েছে প্রধানত ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে। দিনকে দিন এই সংকট আরও প্রকট হচ্ছে। ক্ষমতা কীভাবে হস্তান্তর হবে—সেই বিষয়টার এখনো কোনো মীমাংসা হলো না। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যাটা রয়ে গেছে দেশের রাজনীতিতে।
এ বিষয়ে আমরা একটা পদ্ধতি বের করেছিলাম। সেই পদ্ধতিতে ১৯৯১-এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এরপর ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮-এ মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে আমরা আবারও সরে গেছি। পরের বছরগুলোতে বিগত দুটি নির্বাচনে (২০১৪ ও ২০১৮) এ বিষয়ে সংকট আরও বেড়েছে। ২০২৪-এর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ২০২৩-এ এসে আমরা রাজনৈতিকভাবে আরও পেছনে চলে গেছি।
১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত চারটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা যতটা এগিয়ে গেছি, পরের দুটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেখান থেকে আবার আমরা পিছিয়ে গেলাম। আর ২০২৩ এ বিষয়ে আমাদের অসম্পূর্ণতাকে আরও শক্তিশালী করল।
দেশের রাজনীতিতে সহিষ্ণুতার জায়গাটা আরও নষ্ট হয়ে গেছে। এই জায়গায় ফিরে আসতে আমাদের আরও অনেক সময় লেগে যাবে।
ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ে আমাদের একটা ঐকমত্য তৈরি হয়েছিল। আমরা হয়তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্পের বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি করতে পারতাম। কিন্তু সেটা আমরা পারিনি। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির মধ্যে অসহিষ্ণুতা আগের চেয়ে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অসহিষ্ণুতা ঝেড়ে ফেলে একটা সুশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি হওয়া দরকার। রাজনৈতিক দলগুলো এবং দলগুলোর নেতৃত্বের মধ্যে এই উপলব্ধি আসতে হবে। আলাপ-আলোচনা হবে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান হবে—রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যত দিন না এই উপলব্ধি আসবে, তত দিন সংকটের সমাধান হবে না, আমরা তিমিরেই থেকে যাব।