২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৪:১৮:৩৮ অপরাহ্ন
চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মার্কিন নৌ কর্মকর্তার কারাদণ্ড
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০১-২০২৪
চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মার্কিন নৌ কর্মকর্তার কারাদণ্ড

চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মার্কিন নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে দুই বছরেরও বেশি সময়ের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওয়েনং জাও (২৬) নামে ওই নৌ কর্মকর্তা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। জাওয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের স্পর্শকাতর সামরিক তথ্য পাঠিয়েছেন। 


ওয়েনং জাও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া নৌঘাঁটিতে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের অক্টোবরে তাঁকে চীনের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে স্পর্শকাতর সামরিক তথ্য পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে জাও চীনের কাছে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন মহড়ার খবর ও গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবকাঠামোর তথ্য পাচার করেছেন। 

 

আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, জাও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর বিভিন্ন সামরিক মহড়ার তথ্য চীনের কাছে পাচার করেছেন। এ ছাড়া, জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপে অবস্থিত মার্কিন সেনাঘাঁটির রাডার সিস্টেমের ইলেকট্রিক ডায়াগ্রাম ও ব্লুপ্রিন্ট পাঠিয়েছেন। 


ওকিনাওয়া মার্কিন নৌঘাঁটি এশিয়ায় দেশটির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অন্যতম প্রধান ‘নিরাপত্তা অগ্রাধিকার’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই অঞ্চলে চীনের সামরিক উপস্থিতি মোকাবিলা করতে জোট গঠনে কাজ করেছে। গত কয়েক বছরে এটি এই অঞ্চলে মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নৌ মহড়ার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছে। 

 

মার্কিন বিচার বিভাগ অর্থাৎ জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, জাওয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের স্থাপনায় প্রবেশের ‘নিরাপত্তা ছাড়পত্র বা সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স’ ছিল। সে পোর্ট হুয়েনেমের ভেনচুরা কাউন্টির নৌঘাঁটিতে কাজ করছিল। সেই সময় জাও বিশেষ ‘তথ্য সংগ্রহ ও রেকর্ড করার জন্য’ সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ এমন সামরিক ও নৌ স্থাপনায় প্রবেশ করেছিল। 


জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের দেওয়া তথ্য বলছে, জাও চীনে তথ্য পাঠানোর জন্য ‘অত্যাধুনিক এনক্রিপ্টেড যোগাযোগ পদ্ধতি’ ব্যবহার করেছিলেন। তিনি তথ্য পাঠানোর পরপরই সেগুলোর প্রমাণ ধ্বংস করে ফেলেন। এমনকি তাঁর সঙ্গে এক চীনা গুপ্তচরের সরাসরি সম্পর্কও ছিল। ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের মে মাসের মধ্যে কমপক্ষে ১৪ দফায় কমপক্ষে প্রায় ১৫ হাজার ডলার (১৪ হাজার ৮৬৬ ডলার) অর্থ দিয়েছে চীন। 


জাও জন্মসূত্রে চীনা। তিনি ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হন এবং ২০১২ সালে মার্কিন নাগরিক হন এবং পাঁচ বছর পর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মার্কিন নৌবাহিনীতে যোগ দেন। পরে তাঁকে গত বছরের অক্টোবরে চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালত গত সোমবার সেই অভিযোগের বিভিন্ন প্রমাণের ভিত্তিতে জাওকে ২৭ মাসের কারাদণ্ড দেন।


শেয়ার করুন