যুক্তরাষ্ট্রে ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত একটি বিল পাশ হয়েছে। বুধবার মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে ৩৫২-৬৫ ভোটে বিলটি পাশ হয়। খবর বিবিসি, রয়টার্সের।
যদিও পাশ হওয়া এই বিলটি যুক্তরাষ্ট্রে এখনো পুরোপুরি আইনে পরিণত হয়নি। হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাশের পর এখন বিলটিকে প্রথমে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাঠানো হবে। সেখানে পর্যালোচনা, যাচাই এবং পাশ হওয়ার পর হোয়াইট হাউসে পাঠানো হবে সেটি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষরের পর পুরোপুরি আইনে পরিণত হবে সেই বিল।
সিনেটে ভোটের ফলও যেন প্রতিনিধি পরিষদের অনুরূপ হয়, সে জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বুধবারই আহ্বান জানিয়েছেন নিম্নকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল রিপাবলিকান পার্টির নাম্বার ২ হাউস রিপাবলিকান স্টিভ স্ক্যালিস। এক্সে দেওয়া তিনি বলেন, ‘এই বিলটি খুবই স্পর্শকাতর এবং এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার ব্যাপারটি সম্পর্কিত। আমরা আশা করছি, সিনেট এর গুরুত্ব বুঝতে পারবে এবং এটি পাশ করবে। '
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ৩৩ কোটি ১৯ লাখ মানুষের মধ্যে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। অর্থাৎ দেশটির মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই টিকটক ব্যবহার করেন। এই ব্যবহারকারীদের অধিকাংশই তরুণ প্রজন্মের।
২০২১ সালে টিকটকের বিরুদ্ধে মার্কিন নাগরিকদের স্পর্শকাতর ব্যক্তিগত তথ্য চুরির অভিযোগ উঠেছিল। সে বছরই মার্কিন সেনা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এই অ্যাপটি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন। পরের বছর ২০২২ সালে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও একই আদেশ দেওয়া হয়। এই আদেশের পর এবার চলতি বছর টিকটক পুরোপুরি নিষিদ্ধের এই কার্যক্রম হাতে নিল দেশটি।
এদিকে প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাশের কিছুক্ষণ পর এক ভিডিওবার্তায় বাইটড্যান্সের শীর্ষ নির্বাহী শৌ জি চিউ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে— তা দেশটির অর্থনীতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। এতে একদিকে ক্ষুদ্র-খুচরা ব্যবসায়ীদের পকেট থেকে শত শত কোটি ডলার হারিয়ে যাবে, অন্যদিকে অন্তত ৩ লাখ মার্কিনির কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে। '
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধের পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে— এমন কোনো প্রমাণ দেশটির সরকার পায়নি, তার পরও এই অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার জন্য ওয়াশিংটন উঠে পড়ে লেগেছে। '
এর আগে গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছিলেন, যদি টিকটক নিষিদ্ধ সংক্রান্ত কোনো বিল তার কাছে আসে, তা হলে সেখানে তিনি স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত।