তাইওয়ানে ৭ দশমিক ২ মাত্রার এক ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৯ জনে সীমিত থাকলেও আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এখনো ৫২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৭ টা ৫৮ মিনিটে তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে ঘটা এ ভূমিকম্প পঁচিশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী। এই ভূমিকম্প প্রতিবেশী চীন, ফিলিপাইন এবং জাপানেও অনুভূত হয়েছে। লোকজন কাজে আর শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়ার সময় ভূমিকম্পটি হয়।
তবে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মূলত পূর্বাঞ্চলীয় কাউন্টি হুয়ালিয়েনেই সীমাবদ্ধ ছিল। কাউন্টিটির অধিকাংশ অঞ্চল জনবিরল গ্রামীণ এলাকা। রাজধানী তাইপের ভবনগুলোও ভূমিকম্পে ভীষণভাবে কেঁপে উঠেছিল, কিন্তু এখানে ক্ষয়ক্ষতি ও বিশৃঙ্খলা অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে।
তাইওয়ানের দমকল পরিষেবা জানিয়েছে, ভূমিকম্পে আহতের সংখ্যা ১০৫০ জনে দাঁড়িয়েছে আর এখনো পর্যন্ত ৫২ জন নিখোঁজ আছে।
তারোকো জাতীয় উদ্যানের একটি রিসোর্টের পথে থাকা প্রায় ৫০ জন হোটেল কর্মী প্রাথমিকভাবে নিখোঁজ থাকলেও তাদের মধ্যে অন্তত ২৪ জনের সন্ধান পাওয়া গেছে। তারা প্রায় নিরাপদে আছেন।
হোটেল কর্মীদের দলটি গিরিসঙ্কটে ভরা তারাকো জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে যাওয়া ক্রস-আইল্যান্ড মহাসড়কে আটকা পড়েছিলেন বলে দমকল পরিষেবা জানিয়েছে। উদ্যানটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। আর এর ভেতর দিয়ে যাওয়া মহাসড়কটি হুয়ালিয়েনকে তাইওয়ানের পশ্চিম উপকূলের সঙ্গে যুক্ত করেছে, জানিয়েছে রয়টার্স।
দমকল পরিষেবা কিছু হোটেল কর্মীর ড্রোন ফুটেজও দেখিয়েছে, তাদের সঙ্গে অন্যান্য লোকও ছিল। তারা একটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছিলেন। তাদের পাশে পেছনের অংশ চূর্ণ হয়ে যাওয়া একটি মিনিবাসও পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছিল।
হোটেল কর্মীদের ২৬ জনের আরেকটি দলকে খুঁজে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে তারা।
খনি এলাকায় আটকা পড়া আরও ছয়জনকে বৃহস্পতিবার সকালে হেলিকপ্টারের সাহায্যে উদ্ধার করা হয়েছে।
রেলওয়ে প্রশাসন জানিয়েছে, এদিন হুয়ালিয়েনের রেলওয়ে লাইনগুলো ফের চালু করা হয়েছে। তবে হুয়ালিয়েন শহরের উত্তরে একটি গ্রামীণ স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেটি বন্ধ আছে।
হুয়ালিয়েন শহরের যে বাসিন্দারা বিভিন্ন ভবনগুলোতে আটকা পড়েছিলেন তাদের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাতে কিছু মানুষ বাইরে তাঁবুতে রাত কাটিয়েছেন। অঞ্চলটিতে তিনশরও বেশি পরাঘাত হওয়ায় তারা শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না।
ইউ (৫২) নামের এক নারী বুধবার রাতে বলেন, “পরাঘাতগুলো ভয়ঙ্কর ছিল। এগুলো থামছেই না। আমি বাড়িতে থাকার সাহস পাচ্ছি না।”