০৩ মে ২০২৪, শুক্রবার, ০৯:২৬:০০ অপরাহ্ন
আসছেন কাতারের আমির, সই হচ্ছে ৬ চুক্তি ও ৫ স্মারক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৪-২০২৪
আসছেন কাতারের আমির, সই হচ্ছে ৬ চুক্তি ও ৫ স্মারক

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন-হামাদ আল থানির আসন্ন বাংলাদেশ সফরে দুই দেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হচ্ছে। এছাড়া ঢাকায় একটি সড়ক এবং একটি পার্কের নামকরণ কাতারের আমিরের নামে করা হবে। তিনি আগামীকাল সোমবার দুই দিনের সফরে বিশেষ বিমানযোগে বাংলাদেশে আসছেন। 


সফরকালে যে ছয়টি চুক্তি সই হবে সেগুলো হলো- ১. দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি, ২. আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি, ৩. সাগরপথে পরিবহণ সংক্রান্ত চুক্তি, ৪. উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি, ৫. দু’ দেশের দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি সংক্রান্ত চুক্তি, ৬. যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।


এছাড়া যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হবে সেগুলো হলো- ১. শ্রমশক্তি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক, ২. বন্দর পরিচালনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, ৩. উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, ৪. যুব ক্রীড়াক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক, ৫. কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।


এদিকে ঢাকায় কালশি এলাকায় বালুর মাঠে নির্মিতব্য পার্ক এবং ইসিবি চত্ত্বর থেকে কালশি উড়াল সেতু পর্যন্ত সড়কটি কাতারের আমি শেখ তামিম বিন-হামাদ আল থানির নামে নামকরণ করা হবে। ২৩ এপ্রিল বিকালে কাতারের আমির নিজে উভয় স্থাপনার উদ্বোধন করবেন।


বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে আগামী ২২ ও ২৩ এপ্রিল কাতারের আমির শেখ তামিম বিন-হামাদ আল থানি এই সফর করছেন। তিনি একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ হতে এটি প্রথম উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সফর।


বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর, বন্ধুত্বপূর্ণ ও বহুমুখী। কাতার বঙ্গবন্ধুর সময়কালীন সময়ে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী অন্যতম মুসলিম রাষ্ট্র। 


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের মার্চ ও মে মাসে দুইবার কাতার সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় অবস্থানে উপনীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করছেন।


সাম্প্রতিককালে কাতারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে কূটনৈতিক যোগাযোগ ও আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পরিধি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, জ্বালানি, বিমান চলাচল, কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে। 


কাতারের আমির আগামীকাল সোমবার বিকালে বিশেষ বিমানযোগে ঢাকায় আগমন করবেন। রাষ্ট্রপতি সাহাব উদ্দিন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন। এ সময় তাকে গার্ড অব অনার জানানো হবে। 


আগামী ২৩ এপ্রিল সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ কাতারের আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তারপর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রথমে একান্ত বৈঠক এবং পরে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে দু’ দেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। রাষ্ট্রপ্রতি সাহাব উদ্দিন বঙ্গভবনে কাতারের আমিরের সৌজন্যে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন। ওই দিন সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানযোগে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন। 


কাতারের আমিরের এই সফর তার এশিয়া সফরের অংশ। পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ কাতার সর্বোচ্চ গড় মাথাপিছু আয়ের দেশ। দেশটির শক্তিশালী অর্থনীতি, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও কূটনৈতিক তাৎপরতা ও মধ্যস্থতার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে একটি প্রভাবশালী দেশ হিসেবে বিবেচিত।কাতার মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার যেখানে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি কর্মরত।


পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ সার্বভৌম তহবিলের অধিকারী কাতার বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় বিনিয়োগের উৎস হিসেবে বিবেচিত। তদুপরি কাতার বাংলাদেশের জন্য জ্বালানি আমদানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস। কাতারের আমিরের আসন্ন সফর তাই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্যে এক বিরাট মাইলফলক। 


শেয়ার করুন