দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে গতবারের তুলনায় কিছুটা ভালো ফলাফল করলেও সার্বিকভাবে গেল ৭ বছরের পরিসংখ্যানে ফলাফলে অবনতি হয়েছে। এবার পাসের হার ৭৮.৪৩ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১০৫। এ বোর্ডে এবার পাসের হারের পাশাপাশি বেড়েছে জিপিএ ৫ এর সংখ্যা। তবে একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেননি এমন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে ৪ টি। ফলাফলে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে।
শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য জিপিএ ৫ বা পার্সেন্টেজ নয়। যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়িত হয়, তাহলে প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী প্রকৃত মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে।
দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল পাসের হার ৭৮.৪৩। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১০৫। ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা। মেয়েদের পাসের হার ৮১ .৭ , জিপিএ-০৫ পেয়েছে ৯ হাজার ২৪৬ জন। ছেলেদের পাসের হার ৭৫.৮৫ এর মধ্যে জিপিএ-৫ ৮ হাজার ৮৫৯ জন। এ বছর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী অংশ নেয় ১ লাখ ৯৮ হাজার ১৮৪ জন এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩৬ জন।
এবছর রংপুর বিভাগের অধীনে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে আটটি জেলা থেকে ২৭৩০টি স্কুল পরীক্ষার্থীরা ২৭৮ পরীক্ষা কেন্দ্রে এসএসসি ও সম্মানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবার পূর্ণমানে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অভিভাবক শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, বোর্ডের ফল খারাপ হওয়ার পেছনে শিক্ষকদের সৃজনশীলতার দক্ষতা না থাকা, কোচিং নির্ভরতা এবং শিক্ষার্থীদের আনন্দমুখর পরিবেশে শিক্ষাদান অভাব।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট(এসএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে গত ৭ বছরের তুলনায় কমেছে পাসের হার তিন বছরের তুলনায় কমেছে জিপিএ-৫প্রাপ্ত শিক্ষার্থী সংখ্যা। রোববারের (১২ মে) ফলাফল ঘোষণায় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৪৩।
এদিকে পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩ সালে পাসের হার ছিল ৭৬.৮৭ , ২০২২ সালে পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ১৬, ২০২১ সালে ৯৪ দশমিক ৮০, ২০২০ সালে ৮২ দশমিক ৭৩, ২০১৯ সালে ৮৪ দশমিক ১০, ২০১৮ সালে ৭৭ দশমিক ৬২ এবং ২০১৭ সালে পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
ফলাফল খারাপের কারণ হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা মনে করেন আর্থিক কারণে অনেক শিক্ষার্থী এখনও স্কুলমুখী হচ্ছে না, কোচিং নির্ভরশীলতাও একটা অন্যতম কারণ।
এব্যাপারে ইকবাল হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খাদেমুল ইসলাম বলেন, কোভিডের সময় অনেকের চাকরি গেছে, ব্যবসা পুঁজি হারিয়েছেন। ফলে অর্থনৈতিক কারণে সমস্যায় পড়েছেন। ঝরে পড়েছেন এ কারণে।
সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি ও শিক্ষার্থীদের অতিরিক্তফেসবুক আসক্তি, ক্লাসমুখী না হওয়া ও নজরদারির অভাবকে ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ দেখছেন শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড. মাসুদুল হক।
দিনাজপুর সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আব্দুল জলিল মনে করেন শিক্ষা পদ্ধতিতে এক্সপেরিমেন্ট না করে। আনন্দমুখর শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা দরকার।