বাংলাদেশ ও ভারতের রেল ট্রানজিট চুক্তির মধ্য দিয়ে ট্রান্স এশিয়ান নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে দেশের রেলওয়ে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রেলপথ ব্যবহার করে ভারতের ট্রেন নিজেদের ভূখ-ে যাতায়াত করতে পারবে। আর বাংলাদেশ রেলওয়ে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে যেতে পারবে নেপাল ও ভুটানে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে সই হওয়া সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নে আগামী জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাত্রা হতে পারে। এর আগে দুই দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠকে হবে প্রক্রিয়া নির্ধারণ। বাংলাদেশের রেলওয়ে ট্রেনের সময়সূচি নির্ধারণ করবে। সরকারের অন্যান্য সংস্থার মতামত নিয়ে ঠিক করা হবে ভারতীয় ট্রেন চলাচলের ট্যারিফ। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীর বলেছেন, ভারতের ওপর দিয়ে বাংলাদেশ নেপাল ও ভুটান যাওয়ার সুবিধা পাবে। ভারতীয় ট্রেনের চলাচলে বাংলাদেশ রেলওয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হবে। বাংলাদেশের রেলপথ ব্যবহারের জন্য ভারত ট্যারিফ দেবে। এর হার কত হবে, তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হবে।
প্রস্তাবিত চুক্তিতে ১২টি রুটের কথা বলা হয়েছে, যেসব রুট ব্যবহার করে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ‘সেভেন সিস্টার্স’খ্যাত সাতটি রাজ্যে যোগাযোগ সহজ হবে। নেপাল ও ভুটান যথাক্রমে ১৯৭৬ ও ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি করেছিল; কিন্তু ভারতের ভূখ- ব্যবহার করে বাংলাদেশের মালবাহী গাড়ি চলাচল করতে না পারায় সেটি খুব একটা কার্যকর হয়নি। এখন ভারতের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার কারণে নতুন করে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে আগে হওয়া চুক্তি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা জেগেছে।
পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার গেদে থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রাজ্যটির আলিপুরদুয়ার জেলা ডালগাঁও পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। গত মে মাসে দেশটির রেলওয়ে বোর্ডের প্রস্তাব অনুযায়ী পরীক্ষামূলক যাত্রায় পণ্যশূন্য ভারতীয় রেলগাড়ি গেদে থেকে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় আসবে। সেখান থেকে পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোরের আব্দুলপুর, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, নীলফামারীর সীমান্তবর্তী চিলাহাটী স্টেশন হয়ে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ী স্টেশনে যাবে। সেখান থেকে ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত যাবে। ডালগাঁওকে ভুটান সীমান্তবর্তী স্টেশন বলছে ভারত। যদিও সেখান থেকে ভুটানের ফুয়েন্টশিলং স্থল বন্দরের দূরত্ব শত কিলোমিটারের বেশি।
বর্তমানে পাঁচটি রুটে বাংলাদেশ-ভারত ট্রেন চলে। তিনটি যাত্রীবাহী ইন্টারচেঞ্জ, বাকি দুটি পণ্যবাহী। বাংলাদেশ-ভারত রুটে তিনটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলে। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী রাজশাহী-কলকাতা রুটে আরেকটি ট্রেন চালু হবে।