২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৪:০৪:২২ অপরাহ্ন
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ১৬ বস্তা টাকা!
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৭-২০২২
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ১৬ বস্তা টাকা!

কি‌শোরগ‌ঞ্জের ঐতিহা‌সিক পাগলা মসজি‌দের দানবাক্সে সাড়ে ১৬ বস্তা টাকা মিলেছে। এ ছাড়াও এসব দানবাক্সে রয়েছে সোনা-রুপার গহনাসহ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রাও।

শনিবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এসব দানবাক্স খোলা হয়।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, পাগলা মসজিদের ৮টি দানবাক্স খুলেছেন তারা। কিছুক্ষণের মধ্যেই টাকা গণনা কার্যক্রম শুরু হবে। গণনা শেষে বলা যাবে এসব দানবাক্সে কী পরিমাণ টাকা ও মূল্যবানসামগ্রী দানে পাওয়া গেছে।

সবশেষ গত ১২ মার্চ এই মসজিদের ৮টি দানবাক্সে ১৫ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। যেখানে তিন কো‌টি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকাসহ সোনা-রুপার গহনা ও বি‌ভিন্ন দে‌শের মুদ্রা পাওয়া যায়।

বস্তাভ‌র্তি বিপুল প‌রিমাণ এ টাকা ভাঁজ করা এবং গণনার কাজে অংশ নেন জেলা প্রশাসন, ব্যাংক এবং মসজিদ মাদ্রাসা-এতিম খানার কয়েকশ’ কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।

কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর পারে অবস্থিত ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে নতুন তিনটিসহ মোট আটটি লোহার দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর এসব বাক্স খোলার রেওয়াজ রয়েছে।

জনশ্রুতি আছে, কোনো একসময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝপথে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে।

মুসলিম ও হিন্দু-নির্বিশেষে সব ধর্মবর্ণের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। ওই পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী। কিন্তু ওই সাধকের দেহাবসানের পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে এলাকা এমনকি দেশ-বিদেশের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। এ মসজিদে মানত কিংবা দান-খয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ মানত নিয়ে আসেন এই মসজিদে।

নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন অনেকে। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে মসজিদটিতে।

এসব বিপুল অর্থ-সম্পদ সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনায় রয়েছে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি। এ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব অর্থ মসজিদ কমপ্লেক্স, মাদ্রাসা ও এতিম খানার উন্নয়নের পাশাপাশি অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবা এমনকি দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়ে থাকে।

আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন এ মসজিদে। এই মসজিদের ইতিহাস ২৫০ বছরের বেশি বলে জানা যায়।

শেয়ার করুন