রাজশাহী মহানগর পুলিশের সদর দপ্তর, নগর ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা আজ মঙ্গলবারও পুড়ছে। সিটি করপোরেশনের মেয়রের বাড়িতে চলছে লুটপাট।
এ পরিস্থিতিতে আজ দুপুর ১২টায় রাজশাহী মহানগর ও জেলা বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা বলেন, এ লুটপাট ও সহিংসতা তাঁরা সমর্থন করেন না। তাঁরা দলের নেতা-কর্মীদের আইন হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুন অর রশিদ। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত।
সৈয়দ শাহীন শওকত বলেন, চলমান আন্দোলনে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন। সেই সঙ্গে শহীদ হয়েছেন অন্য শ্রেণি-পেশার মানুষ। তিনি সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও আহত ব্যক্তির দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
শাহীন শওকত আরও বলেন, এ দেশে আর কোনো প্রকার রাহাজানি ও লুটপাট করতে দেওয়া হবে না। গতকাল সোমবার শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের মানুষ আনন্দ–উল্লাসে ফেটে পড়েন। দেশবাসী সবাই রাস্তার নেমে আসেন এবং আনন্দ করেন। এ ফাঁকে কিছু দুষ্কৃতকারী এই ‘ডামি সরকারের সন্ত্রাসীরা’ বিএনপিসহ স্বাধীনতাকামী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে লুটপাট চলায়। বিএনপি এটা সমর্থন করে না। এ লুটপাট রুখতে বিএনপি ও এর সহযোগী নেতা–কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।
আইন কারও হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ শাহীন শওকত বলেন, প্রতিটি খুনের বিচার হবে। যারাই দোষী হবে, তাদেরই বিচারের আওতায় আনা হবে। এ জন্য তিনি আবারও সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে গ্রামে ও শহরে এ বিষয়ে মাইকিং করার পরামর্শ দেন তিনি।
গতকাল বিকেলে নগরীর উপশহরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের চারতলা বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর আগে বাড়ির সব আসবাব লুটপাট করা হয়েছে। আজ সকালে বাড়িটির সামনে গিয়ে দেখা যায়, মানুষ তখনো বাড়ির দরজা, জানালা, গ্রিল ও পানির লাইনের পাইপ খুলে নিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ির প্রধান ফটকের সামনে কয়েকজন হাতুড়ি দিয়ে গেট ভাঙার চেষ্টা করছেন।
সিটি করপোরেশনের ১০তলা ভবনের নিচতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তালা ভাঙতে না পারলে দরজা ভেঙে নগর ভবনের কক্ষগুলোর ভেতরে ঢুকেছে দুর্বৃত্তরা। নগর ভবনের দোতলায় মেয়রের দপ্তরসহ অন্যান্য কক্ষগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আজ সকালেও আগুনের ধোঁয়া উঠছিল। প্রতিটি কক্ষের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি), ফ্যান, কম্পিউটারসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ষষ্ঠ তলায় শুধু মসজিদের এসিগুলো আছে। সেখানকার পর্দাগুলো খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।