আসন্ন ঈদযাত্রায় মহাসড়কে মোটরসাইকেলে রাইডশেয়ারিং বন্ধের মাধ্যমে ব্যক্তিগত বাইক নিয়ে চলাচলকারীদের যাত্রাপথে হয়রানি করা হলে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
মঙ্গলবার সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, রাইডশেয়ারকারী মোটরসাইকেলের সঠিক কোনো সংখ্যা বা ডাটাবেইজ বিআরটিএ বা ট্রাফিক বিভাগের কাছে নেই। ফলে কোনটি রাইডশেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল আর কোনটি ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল- তা আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই। চলার পথে কোথাও কোথাও সড়কের মাঝপথে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দ্রুতগতির মোটরসাইকেল থামিয়ে কাগজপত্র চেকিংয়ের দৃশ্য প্রায়ই চোখে পড়ে। এই ধরনের চেকিং পদ্ধতি সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
‘তাই যানজট তৈরি না হয় এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রেখে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র চেকিং, চেকিংয়ের নামে অহেতুক কোনো মোটরসাইকেল চালক যাতে হয়রানি বা চাঁদাবাজির শিকার না হয়, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ৩৭ লাখের বেশি মোটরসাইকেল রাস্তায় চলছে। গণপরিবহণ সংকট, বাসমালিকদের স্বেচ্ছাচারিতা, পদে পদে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য, রেলের টিকিট অব্যবস্থাপনা, শিডিউল বিপর্যয়, যানজটসহ নানা কারণে ক্রমেই মানুষ মোটরসাইকেলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই বাহনটি কখনোই গণপরিবহণের বিকল্প হতে পারে না। তবুও পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশের আদলে গণপরিবহণের সংখ্যা কমানোর মধ্য দিয়ে যানজট কমাতে দেশে রাইডশেয়ারিং চালু করা হলেও বাস্তবভিত্তিক নীতিমালা ও মনিটরিংয়ের অভাবে এসব রাইডশেয়ারকারী যানবাহন যানজট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
‘এ অবস্থায় দেশের সড়কের তুলনায় মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই বাহনটির নিবন্ধন বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তার আগে গণপরিবহণ সংকট সমাধান করা, যাত্রী সেবার মানোন্নয়ন, যাত্রী হয়রানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে মনে করি।’
গত ঈদুল ফিতরে প্রায় ২৫ লাখ মোটরসাইকেল রাস্তায় নামার কারণে স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা লক্ষ্য করা গেলেও সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। তাই আপাতত গণপরিবহণ সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা নিষিদ্ধ না করে চারটি শর্তারোপের মাধ্যমে চলাচলের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।সেগুলো হলো- ১. বাইকের গতি নির্ধারণ করে দেওয়া। ২. লাগেজ নিয়ে না যাওয়া। ৩. পরিবারের একাধিক সদস্য নিয়ে চলতে না দেওয়া। ৪. এই বাহনটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
একইসঙ্গে আমাদের গৌরব ও অহংকারের প্রতীক পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের স্পিড লিমিট নির্ধারণ করে সিসি ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে ঈদের আগে মোটরসাইকেল চালুর দাবি জানান মোজাম্মেল হক চৌধুরী।