বাংলার অখণ্ড মানচিত্র প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছিলেন তার ‘তীব্র প্রতিবাদ’ জানিয়েছে ভারত। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি। এই ইস্যুতে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি আমরা। আপনি যে পোস্টের কথা বলেছেন, তা সরিয়ে ফেলার বিষয়েও অবগত হয়েছি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে তাদের জনসম্মুখে মন্তব্যের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। যখন বাংলাদেশের জনগণ ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত, তখন জনসম্মুখে এ ধরনের মন্তব্য করার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। তিনি বলেন, আমি পুনরায় বলছি বাংলাদেশ সরকারের কাছে এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি আমরা।
উল্লেখ্য, গত ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুরসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করে একটি মানচিত্র প্রকাশ করেন। ১৯৪৭ সালে বাংলা ভাগের ধারাবাহিকতায় যে বাংলাদেশ হয়েছে সেই ভূখণ্ডকে ‘খণ্ডিত’ আখ্যা দিয়ে ‘নতুন ভূখণ্ড ও বন্দোবস্তের কথা’ উল্লেখ করেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। যদিও কয়েক ঘণ্টা পর পোস্টটি ডিলিট করেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফর নিয়েও কথা বলেন জয়সওয়াল।
তিনি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রধান অংশীজন। ঢাকাকে বলেছি, আমাদের উন্নয়ন সহযোগিতা এবং কানেকটিভিটি, বাণিজ্য, জ্বালানি ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বহুমুখী সম্পৃক্ততার কার্যক্রমগুলো বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা মেটাতে কিংবা তাদের কল্যাণের জন্য নিবেদিত। তিনি বলেছেন, আমরা পারস্পরিক আস্থা, সম্মান এবং একে অপরের উদ্বেগ ও স্বার্থের বিষয়ে পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়তে চাই।