বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার গণতন্ত্র মানে নির্বাচনের সময় বিরোধীদলের সবাইকে জেলের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখা। উনি যে গণতন্ত্র দিয়েছিলেন তাতে দেখেছি ভোট কেন্দ্রে চতুষ্পদ জন্তু বিচরণ করত। ভোটাররা যেত না। তিনি শুধু একটি দেশকে সমীহ করতেন। মুরুব্বি মানতেন। সেই জন্যই বলতেন, আমি ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সারাজীবন মনে রাখবে। আপনি কী দিয়েছেন যা বাংলাদেশের মানুষ জানে না। তারা আপনাকে সাপোর্ট করে।
তিনি বলেন, এই জন্যই আমাদের গণতন্ত্র থাকুক বা না থাকুক, এখানে পার্লামেন্ট থাকবে কি থাকবে না, সেই পার্লামেন্টে সত্যিকারের প্রতিনিধিরা যাবেন, নাকি নর্তকিরা সেখানে নাচবে গাইবে মমতাজের মতো, আর পার্শ্ববর্তী দেশ তাদের সমর্থন করবে। এই পার্শ্ববর্তী দেশ আমাদের গণ-অভ্যুত্থানের পর খুবই অসন্তুষ্ট। গোটা বিশ্ব খুশি হলেও তারা এখনও মেনে নিতে পারেনি।
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরীর শহীদ জিয়া শিশুপার্ক এলাকায় রাজশাহী মহানগর যুবদল আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আপনি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারিখ ঘোষণা করুন। আপনি স্পষ্ট করে বলুন যে এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। জাতি এই সময়টার জন্যই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। আমরা আশা করি, সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং সত্যিকার অর্থে একটা গণতন্ত্র আসবে দেশে। মানুষ তখন স্বাধীন থাকবে।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, মিথ্যাকে ঢেকে রাখা যায় না। এটা প্রকাশিত হয়। শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সবাইকে কেনা যায়, কিন্তু শেখ হাসিনাকে কেনা যায় না। তিনি বলেছিলেন, মানুষকে গণতন্ত্র দিয়েছি। কিন্তু আপনি যে কত নিয়েছেন তা মানুষকে বলেননি। আপনার গণতন্ত্র মানে ভোটাররা ভোট দিতে যাবে না। এটাই ছিল আপনার গণতন্ত্রের নমুনা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা চক্রান্তের মধ্যে দিয়ে আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটছি। গণতন্ত্রের যে আরও শর্ত আছে অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচন- সেদিকে হাঁটতে হবে। প্রয়োজনীয় যে সংস্কার, আমাদের জাতীয় সংসদ, সংবিধান, জনপ্রশাসন, পুলিশ-প্রশাসন সবকিছুতে সংস্কার দরকার। কিন্তু সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করে এটা নিয়ে তর্কবিতর্ক করলে হবে না। বাংলাদেশের মানুষ ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনকে আকাশের তারা করে দিয়েছে। এখন দ্রুত নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই কাজটি আপনারা এখন করুন।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন, রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবিসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।