শেষ বলে নাটকীয়ভাবে হেরেছে খুলনা টাইগার্স। ৬ বলে ১৫ রানের কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে ফাইনালে পা রেখেছে চিটাগং কিংস। অথচ, ফাইনালে উঠা মোটেও সহজ ছিল না দলটির জন্য। একটা সময় ১৫ বলে ৩২ রান লাগত। সেখান থেকে চিটাগংয়ের লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা ম্যাচটা জিতিয়ে দিয়েছেন। কোথায় হেরে গেলেন মিরাজ। হারের পেছনে কার দায় দেখেন তিনি। ম্যাচ শেষে সে সবই বলতে হয়েছে মিরাজকে।
শেষ দুই ২১ রান করতে হতো চিটাগংকে। ১৯তম ওভারে এসে হাসান মাহমুদ দেন মাত্র ৬ রান। তখনও ১৫ রান লাগে। অধিনায়ক মিরাজের হাতে অপশন ছিল দুটি- ৩ ওভারে ২৩ রান দেওয়া জেসন হোল্ডার ও ২ ওভারে ১৭ রান দেওয়া মুশফিক হাসান। মিরাজ দেশি মুশফিককে বেছে নিয়েছেন। যার দায় শেষ পর্যন্ত চুকাতে হয়েছে দলকে ফাইনালের রেস থেকে বাদ পড়ে।
পৌনে তিন শ টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হোল্ডারকে কেন আনা হলো না ফাইনাল ওভারে। সেই প্রশ্নের মুখে হোল্ডাররের কাঁধেই হারের দায়টা চাপিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে তার ব্যাখ্যা ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে আলিস আল ইসলামের কাছে একটি ছক্কা ও চার হজম করেন হোল্ডার। আর ওখানেই ফসকে যায় ম্যাচটা।
মিরাজ বলেন, ‘পরিকল্পনা যেটা ছিল, হোল্ডার এর আগে যে বোলিংটা করেছে; আমাদের ১৪ বলে (আসলে ১৫ বলে) রান লাগত ৩২। ওখানে এক বলে একটা ছক্কা, একটা চার খেয়েছে। ওখানেই ম্যাচটা ছুটে গেছে। একজন অভিজ্ঞ বোলারকে ওই মুহূর্তে যদি বোলাররা ৬, ৪ মেরে দেয়, তাহলে তো এটা আমাদের দলের জন্য কঠিন।’
মিরাজ আরও বলেন, ‘হাসান বেশি ভালো বল করেছে বলে শেষ ওভারে ১৫-তে গেছে। ওখান থেকে যদি মুশফিককে করাতাম, তাহলে শেষ ওভারে তো আবার এ রকম ১০-১২ লাগত। এ জন্য আমি আত্মবিশ্বাস পাচ্ছিলাম না, কারণ ওই দুটা বল যেভাবে করেছে, যেখানে করেছে হোল্ডার; অন্তত মুশফিক তো শেষ দুইটা ওভার খুবই ভালো করেছে। ওদের যে ভাইটাল ব্যাটসম্যান, তার উইকেটটা নিয়েছে। এ চিন্তা করে ওকে দিয়েছি।’
ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত ম্যাচটা হাতে ছিল খুলনার। চিটাগংকে জিততে হলে বাউন্ডারি হাঁকাতে হতো। সেই বলে কি পরিকল্পনা ছিল খুলনার। যার জবাবে মিরাজ বলেন, ‘মুশফিককে বারবার বলছিলাম তুমি কী চাইছ। কারণ এখানে বোলার প্রায়োরিটি গুরুত্বপূর্ণ। আমি বল করব না, বোলার বল করবে। ও বলল আমি ইয়র্কার করব। আমি বললাম ইয়র্কার কোথায় করলে ভালো হবে, তখন বলল যে ভাই আমি স্টাম্পেই করব। আমি বললাম স্টাম্পেই ইয়র্কার করার চেষ্টা করো। স্টাম্পে ইয়র্কার করলে হয়তো কাজ হবে।’
কিন্তু অধিনায়কের সেই পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারেননি মুশফিক। বল করেছেন অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। চার হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়েছেন আলিস। তবুও মুশফিককে দায় দেননি মিরাজ। বলেন, ‘আমি ওর দোষ দিচ্ছি না। ও এ রকম চাপের পরিস্থিতিতে খেলছে, অনেক দিন ইনজুরিতে ছিল। ও ভালো বল করেছে। অনেক দিন পর ম্যাচ খেলা কঠিন। ওর ওভারের দোষ দিচ্ছি না। আমার কাছে মনে হয় যে হোল্ডারের ওই দুটা বল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। সে সব জায়গায় টুর্নামেন্ট খেলে বেড়ায়। আমি ওর কাছ থেকে এটা আশা করি না। ওখানেই তো আমাদের খেলা অর্ধেক শেষ হয়ে গেছে।’