১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১০:০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে দিয়ে ভর্তিচ্ছুদের বিক্ষোভ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৭-২০২২
রাজশাহীতে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে দিয়ে ভর্তিচ্ছুদের বিক্ষোভ

টিকেট কাটার পরও ট্রেনে যায়গা হয়নি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা অনেক শিক্ষার্থীর। আবার অনেকেই ট্রেনের টিকেট না সংগ্রহ করেই চেপে বসেন ট্রেনের সিটে। ফলে বুধবার (২৭ জুলাই) বিকাল ৪টায় ঢাকামগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ার আগে জায়গা না হওয়ায় ভর্তিচ্ছু অনেক শিক্ষার্থীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। এতে ফুঁসে ওঠে রাজশাহীতে আসা ভর্তিচ্ছুরা। এক পর্যায়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে থাকা ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থী স্টেশন প্লাটফর্মে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুর ২টায় ‘বি’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে রাবির ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়। হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের অনেকেই টিকেট কেটেছেন (সিট ও স্ট্যান্ডিং)। যারা টিকেট পেয়েছেন তারা তো বিকাল ৪টার ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে নির্দিষ্ট সময়েই উঠে পড়েন। আবার হাজার হাজার শিক্ষার্থীর অধিকাংশই টিকেট না কেটেই ট্রেনে উঠে যায়। এতে শিক্ষার্থীদের ট্রেনে দাঁড়ানোর জায়গার চরম সংকট দেখা দেয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ট্রেন কর্তৃপক্ষ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়। এতে শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষব্ধ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তার বিকাল ৪টার পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিক্ষুব্ধ আটকিয়ে দিয়ে সেখানে রেললাইনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের রাত ১১ টা ২০ মিনিটের ধূমকেতু এক্সপ্রেসে তাদেরকে ঢাকায় পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দেন। এতে শিক্ষার্থীরা আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

ইমন নামের বিক্ষুব্ধ এক ভর্তিচ্ছু অভিযোগ করে বলেন ‘আমি স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটেছি। কিন্ত হাজার হাজার শিক্ষার্থী কোনো টিকিট পায়নি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত বগির ব্যবস্থা না করায় ট্রেনে আমরা দাঁড়িয়ে যাওয়ারও জায়গা পাইনি। তাই অতিরিক্ত বগির ব্যবস্থা করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছি। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) কোনো ব্যবস্থা করতে না পারায় আমরা ট্রেনটি আটকিয়ে রেখে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি।’

পিউ পিংকি নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছি। কিন্তু বাসে কিংবা ট্রেনের কোনো টিকেট পাইনি। একজন মেয়ে মানুষ হয়ে আমি কীভাবে ঢাকায় যাবো। তাই বাধ্য হয়ে ট্রেনে উঠেছিলাম। ট্রেনে দাঁড়িয়ে থাকার জায়গাও পাচ্ছিলাম না। এক পর্যায়ে ট্রেনটি ছাড়ার নির্ধারিত সময়সীমার আগ মূহুর্তে ট্রেনের অভ্যন্তকে শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে থাকার তিল ধারনের ঠাঁই ছিলো না। জায়গা ছিলো না। তখন রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের সবাইকে নামিয়ে দেয়।’

রাজশাহী রেলওয়ে জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল হোসেন বলেন, ‘ রেল জাতীয় সম্পদ। এর যাতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য জিআরপি থানা পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।’

উদ্ভুত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘রাবির ভর্তি পরীক্ষার জন্য সকল ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত বগিও যুক্ত করা হয়েছে। সিটের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা স্ট্যাডিং টিকিটও কেটেছে। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থী যারা ট্রেনের কোনো টিকিটই সংগ্রহ করেননি তারাও পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে পড়ে। এতে শিক্ষার্থীদের দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে ট্রেন ছাড়া সম্ভব হয়নি। শিক্ষার্থীদের কীভাবে ঢাকায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা যায় সেটি আমরা ভাবছি।’

শেয়ার করুন