০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বুধবার, ০৬:৫৮:৫৭ অপরাহ্ন
তানোরে স্ত্রীর যৌতুক মামলায় এসআই কারাগারে!
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৯-২০২৫
তানোরে স্ত্রীর যৌতুক মামলায় এসআই কারাগারে!

রাজশাহীর তানোরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন মামলায় এক স্বামী পুলিশের এসআই এখন কারাগারে। তার নাম কাউসার আলী (২৬)। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা রাজশাহীতে কর্মরত রয়েছেন। বাড়ি তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার ময়েনপুর মহল্লায়। তিনি ওই মহল্লার বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের পুত্র।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে আনিসা ইসলাম তৃপ্তি (২২) বাদি হয়ে স্বামী কাউসার আলীসহ তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তার পিতা রফিকুল ইসলাম ও মা তহমিনা বেগম। যার মামলা নম্বর-১০৩/২০২৪ (তানোর)। ওই মামলায় ৩ সেপ্টেম্বর বুধবার কাউসার আলী আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে জামিন আবেদন করেন। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত তার জামিন না মুঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিষয়টি বৃহস্পতিবার সকালে মোবাইলে নিশ্চিত করেছেন তৃপ্তি।  


পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২২ সালের ২৯ জুলাই ময়েনপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম রুবেলের কন্যা তানিসা ইসলাম তৃপ্তির সঙ্গে একই গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুত্র কাউসার আলীর বিবাহ হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা সন্তান হয়। যার বয়স প্রায় দেড় বছর। কিন্তু বিবাহ পরবর্তী সময়ে জামাই এসআই কাওসার আলী যৌতুক বাবদ তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা তার কাছ থেকে নেয়। এতে তারা প্রায় ৪ মাস ভালোভাবে ঘর-সংসার করে। এরপরে কাউসার আলীর নির্দেশে তার পিতা-মাতা তৃপ্তিকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক বাবদ আরো পনের লাখ টাকা নিয়ে আসার জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিতে থাকে। এমনটি সম্ভব না হলে তৃপ্তির বাবার ১০ বিঘা জমি ভোগ-দখলে ছেড়ে দেবার জন্য বলা হয়। এছাড়াও গ্রামে পাঁকা বাড়ি তৈরি করে দেয়ার জন্য নানাভাবে চাপ দেয়া হয়।


এসব ঘটনা তৃপ্তি তার পিতা-মাতা ও পরিবারকে জানালে পিতা রবিউল ইসলাম তার জামাই এসআই কাওসার আলী ও তার পিতা-মাতার সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানেও তৃপ্তির বাবা রবিউল ইসলামকে যৌতুক হিসেবে পনের লাখ টাকা দিতে চাপ দেয়। কিন্তু রবিউল যৌতুকের এতো টাকা দিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। এরপর থেকেই কাওসার আলী তার স্ত্রী তৃপ্তিকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। এক পর্যায়ে তৃপ্তিকে এক কাপড়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। তবে, যৌতুক দাবির ব্যাপারে এসআই কাউসারের পিতা রফিকুল ইসলাম অস্বিকার করে বলেন, তার ছেলে ও ছেলে বউয়ের দাম্পত্য জীবনে কলহের সূত্র ধরে ছেলে বউ বাড়ি থেকে চলে গেছে। পরে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করায় তারা হয়রানির মধ্যে পড়েছেন বলে জানান তিনি। 


প্রসঙ্গত, বিগত ২০২৪ সালের দুই আগস্ট ভিকটিমের পিতা প্রভাষক রবিউল ইসলাম রুবেল বাদি হয়ে এসআই কাওসার আলীসহ তিনজনকে আসামি করে তানোর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু থানা পুলিশ এমন অভিযোগ মামলা হিসেবে না নিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে নিরুপায় হয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করা হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 


শেয়ার করুন