২৮ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৪:১৩:১৩ পূর্বাহ্ন
ধর্মান্তর, গোপন বিয়ে ও এক অনন্ত প্রেম, ধর্মেন্দ্র-হেমার অজানা অধ্যায়
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১১-২০২৫
ধর্মান্তর, গোপন বিয়ে ও এক অনন্ত প্রেম, ধর্মেন্দ্র-হেমার অজানা অধ্যায়

অনেক বছর কেটে গেলেও ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর প্রেম আজও বলিউড জগতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তাঁদের দেখা, কাজ করা, প্রেম এবং বিয়ে—সব মিলিয়ে তাঁদের জীবন যেন এক পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা। সম্প্রতি ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর আবারও উঠে এসেছে এই কিংবদন্তি প্রেমকাহিনি।


হেমা মালিনী তার আত্মজীবনী ‘হেমা মালিনী: বিয়ন্ড দ্য ড্রিম গার্ল’-এ প্রথম সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, একটি অনুষ্ঠানে মঞ্চে যাওয়ার সময় শুনেছিলেন ধর্মেন্দ্র শশী কাপুরকে পাঞ্জাবিতে বলছেন—“মেয়েটা খুব সুন্দর।” তখনই তাঁকে পরিচয় করানো হয় রাজ কাপুরের “ড্রিম গার্ল” হিসেবে। দুই সুপারস্টারের সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি অস্বস্তি আর নার্ভাসনেস সামলাতে পারেননি।


‘তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান’ থেকে প্রেমের শুরু

১৯৭০ সালে ছবির সেটে তাঁদের আবার দেখা হয়। তখন ধর্মেন্দ্র ছিলেন সানি ও ববি দেওলের বাবা। কিন্তু হেমাকে দেখেই তাঁর মনে জন্ম নেয় এক নতুন অনুভূতি। হেমাও পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন—“ধর্মেন্দ্রকে দেখেই বুঝেছিলাম, এমন একজন মানুষই আমার জীবনের সঙ্গী হওয়া উচিত।”




দুজন একসঙ্গে কাজ করেছেন ৪২টি ছবিতে—শোলে, সীতা অউর গীতা থেকে শুরু করে নসীব ও আন্ধা কানুনসহ বহু চলচ্চিত্রে তাঁদের রসায়ন দর্শকদের মুগ্ধ করে যায়। কাজের ফাঁকেই কাছাকাছি আসতে থাকেন তাঁরা।


ধর্মেন্দ্র ১৯৫৭ সালে প্রকাশ কৌরকে বিয়ে করেছিলেন। হেমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকলেও একসময় ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে অভিনেত্রী অনীতা রাজের সম্পর্ক নিয়েও শোরগোল ওঠে। এই সম্পর্কের আঁচ পৌঁছায় তাঁর সংসারেও। বিষয়টি জানতে পেরে হেমা আঘাত পান এবং ধর্মেন্দ্রকে সতর্ক করেন। শেষমেশ ধর্মেন্দ্র অনীতা রাজের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন। অনীতা পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে পরিচালক সুনীল হিঙ্গোরানিকে বিয়ে করেন।


পাঁচ বছর প্রেম করার পরও বিয়েতে বাধা তৈরি হয়। হেমার পরিবার দ্বিধায় ছিল, আর ধর্মেন্দ্রর প্রথম স্ত্রী প্রকাশ বিচ্ছেদে রাজি ছিলেন না। আইনি জটিলতার কারণে হিন্দু আইনে বিয়ে করা সম্ভব হচ্ছিল না।


 


অবশেষে এক চরম সিদ্ধান্ত—ধর্মেন্দ্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন; নতুন নাম নেন দিলাওয়ার খান। হেমাও রূপান্তরিত হন আইশা নামে। গোপনে দুজন সাক্ষী রেখে সম্পন্ন হয় তাঁদের বিয়ে। পরে দক্ষিণ ভারতীয় রীতি মেনে আরেকটি অনুষ্ঠানও হয়। ১৯৮১ সালে জন্ম নেয় তাদের প্রথম মেয়ে এশা দেওল। ১৯৮৫ সালে আসে দ্বিতীয় কন্যা আহানা।


১৯৮১ সালে স্টারডাস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রকাশ কৌর বলেন—“শুধু আমার স্বামী কেন, যে কোনো পুরুষই হেমাকে পছন্দ করতেন। তিনি হয়তো নিখুঁত স্বামী নন, কিন্তু একজন অসাধারণ বাবা।”


তবে প্রকাশ কখনো হেমাকে দোষারোপ  না করলে জানিয়েছেন,  নিজে একই জায়গায় থাকলে হেমার মতো কাজ করতেন না। তার ভাষায়, ‘আমি বুঝতে পারি হেমার অনুভূতি। তাঁকে পৃথিবীর, আত্মীয় ও বন্ধুদের সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু আমি যদি হেমার জায়গায় থাকতাম, আমি হেমার মতো কাজ করতাম না। একজন স্ত্রী ও মা হিসেবে আমি এটা করতে পারি না।’


হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে


শেয়ার করুন