দীর্ঘদিনের পাঁজরের চোটের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার ডাগ ব্রেসওয়েল। ৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার চলতি মৌসুমে চোটের কারণে নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটেই মাঠে নামতে পারেননি, যা তাকে অবসরের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিকসের এক বিবৃতিতে অবসরের ঘোষণা দিয়ে ব্রেসওয়েল বলেন, ক্রিকেট আমার জীবনের গর্বের অংশ। ছোটবেলা থেকেই এই খেলাটাই ছিল আমার স্বপ্ন। দেশের হয়ে এবং সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের হয়ে খেলার সুযোগ পাওয়ায় আমি কৃতজ্ঞ। প্রথম শ্রেণির ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারা সত্যিই এক বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়।
২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ২৮টি টেস্ট, ২১টি ওয়ানডে ও ২০টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ডানহাতি এই পেসার। সবশেষ তিনি ২০২৩ সালে জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন।
ব্রেসওয়েলের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত আসে মাত্র তৃতীয় টেস্টেই। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে হোবার্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে তিনি নিউজিল্যান্ডকে ২৬ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্ট জয় এনে দেন। সেই জয় এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় নিউজিল্যান্ডের শেষ টেস্ট জয়।
মোট ২৮টি টেস্টে তিনি শিকার করেছেন ৭৪ উইকেট, গড় ৩৮.৮২। সাদা বলের ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের হয়ে তার সংগ্রহ ৪৬ উইকেট।
নিউজিল্যান্ডের অন্যতম খ্যাতনামা ক্রিকেট পরিবার থেকে উঠে এসেছেন ব্রেসওয়েল। তার বাবা ব্রেন্ডন ও চাচা জন—দুজনই ছিলেন টেস্ট ক্রিকেটার। জন ব্রেসওয়েল পরবর্তীতে একাধিকবার নিউজিল্যান্ড দলের কোচের দায়িত্বও পালন করেন। অন্য দুই চাচা ডগলাস ও মার্ক খেলেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট।
চাচাতো ভাই মাইকেল ব্রেসওয়েল-এর সঙ্গে তিনি দুটি ওয়ানডে ও একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। মাইকেল আগামী মাসে ভারতের সফরে নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব করবেন। ২০১০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও তারা একসঙ্গে খেলেছিলেন।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ব্রেসওয়েলের অর্জন অনন্য। ১৩৭ ম্যাচে তিনি করেছেন ৪৫০৫ রান (গড় ২৫.৪৫), যার মধ্যে রয়েছে তিনটি শতক, এবং নিয়েছেন ৪৩৭ উইকেট (গড় ৩১.০৮)। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪ হাজারের বেশি রান ও ৪০০-এর বেশি উইকেট নেওয়ার এই বিরল কৃতিত্ব নিউজিল্যান্ডে আছে কেবল আরেক ক্রিকেটার—স্পিনার জিতেন প্যাটেল-এর।

