২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:৪৭:০৭ অপরাহ্ন
ইভিএমে কারচুপির কোনো প্রমাণ পাইনি: সিইসি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৮-২০২২
ইভিএমে কারচুপির কোনো প্রমাণ পাইনি: সিইসি

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে নিত্যপণ্যের পাশাপাশি প্রায় সব ধরনের সবজির দামও বেড়েছে। পাইকারি পর্যায়ে সবজির দাম কম থাকলেও খুচরা পর্যায়ে প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে রাজধানীর কাওরান বাজারে পাইকারি পর্যায় ও মঙ্গলবার নয়াবাজার, মালিবাগ বাজারে খুচরায় এমন চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর কাওরান বাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩৫ টাকা, পটোল ২৫-৩০ টাকা, বেগুন ৪০-৫০ টাকা, টমেটো ৭০-৮০ টাকা, শসা ৪৫-৫০ টাকা, পেঁপে ১০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২০-২৫ টাকা, আলুর কেজি ২০-২২ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা। তবে মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াবাজার, মালিবাগ বাজার ঘুরে ও খুচরা সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি কেজি করলা বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৫৫ টাকা, পটোল ৪৫-৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৭০ টাকা, টমেটো ১০০-১২০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা, পেঁপে ২০-৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০-৪০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৫৫ টাকা।

রাজধানীর নয়াবাজারে সবজি কিনতে আসা মো. সুফিউলাহ বলেন, বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। বাজারে এমনিতেই সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। সবজি কিনে দুই বেলা খেয়ে বাঁচব তারও উপায় নেই। কাওরান বাজারে পাইকারি সবজি বিক্রেতা মো. সোবাহান বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাওরান বাজারে সবজি আসে। পরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধির জন্য কিছুটা সবজির দাম বেড়েছে। তবে পাইকারি পর্যায়ে যা বেড়েছে খুচরা বিক্রেতারা এই অজুহাতে প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহণ ভাড়া আমাদের দিতে হয়। দাম যা বাড়ানোর আমরা বাড়াব, খুচরা বিক্রেতারা এ অজুহাতে কিভাবে দাম বাড়ায় তা বের করতে হবে।

সবজির দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে নয়াবাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা তাঁরা মিয়া বলেন, পাইকারি বাজারেই সবজির দাম বাড়ানো হয়েছে। আমাদের বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। তাই দাম বাড়তি। তবে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৩৫ টাকা কিন্তু খুচরা বাজারে ৫০-৫৫ টাকা বিক্রি ও ৫০ টাকার বেগুন ৮০ টাকা বিক্রির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাইকারি বাজার থেকে সবজি খুচরা বাজারে আনতে গাড়ি ভাড়া, লেবার খরচ, পলিব্যাগ কেনার খরচ, জায়গা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, বাজারে ঝাড়–দারের বিল, পাহারা বিল ও একজন লোক কাজ করে। এসব খরচ দিয়ে সবজি বিক্রি করে লাভ করতে হয়। পাইকারি বাজার থেকে আনতে কোনো খরচ না হলে কেজিতে ৪-৫ টাকা লাভ রেখে বিক্রি করা যেত। এই বাড়তি খরচ কিভাবে আমার কাছ থেকে দেব। ব্যবসা করে সব খরচ রেখে লাভ করতে হয়। তিনি জানান, এসব খরচ বাদে রাস্তায় বিভিন্ন স্থানে লাইনম্যানদের টাকা দিতে হয়।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, সার্বিক বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাতে হবে। পাইকারি পর্যায়ে কত শতাংশ ও খুচরা বিক্রেতারা কত শতাংশ লাভ করবে তা ঠিক করে দিতে হবে। এ সব বিষয়ে সার্বিক বাজার তদারকি থাকতে হবে। এতে করে ভোক্তারা উপকৃত হবেন। তা না হলে ব্যবসায়ীরা কোনো অজুহাত পেলেই ভোক্তার পকেট কাটবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কাজ করা হচ্ছে। প্রতিদিন রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বাজার তদারকি করছেন। চালের বাজার থেকে শুরু করে ভোজ্যতেলের বাজার এমনকি ডিমের বাজারে অস্থিরতা দূর করতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অসাধুদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এমনভাবে সবজির বাজারেও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মূল্য ঠিক করা হবে।

শেয়ার করুন