রাজশাহীর তানোরে সমাজ প্রধানের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়া মোবাইল ফোন হারানোকে কেন্দ্র করে চোর আখ্যা দিয়ে ১০ বছর ধরে সমাজ চ্যুত করে রাখা মা-ছেলেকে বেধে মারপিটসহ নির্যাতন করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে তানোর পৌর এলাকার কালীগন্জ মাসিন্দা হলদার পাড়া গ্রামে। এঘটনায় ওইদিন বিকালে ওই নারী বাদি হয়ে সমাজ প্রধান শংকর অরফে পরিমলসহ ৩ জনকে আসামী করে তানোর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নিয়ে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি আপোষ করে নিতে বলেছেন বলে জানান ভুক্তভোগী ওই নারী।
অপর দিকে মা-ছেলের স্বাক্ষর করা ফাঁকা স্ট্যাম্পে ওই নারীর বাড়িসহ মোটা অংকের টাকা বসিয়ে ওই নারীকে ফাানোর জন্য সমাজ প্রধান বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতিসহ হুমকি প্রদান করছেন বলেও জানান ওই নারী। ফলে, বিচারের আসায় প্রসাশনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অসহায় ওই নারী। গত সোমবার ও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই নারী তানোর প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পুলিশ তদন্ত করতে গ্রামে গিয়ে সমাজ প্রধানের সাথে কথা বলে স্থানীয় ভাবে আপোষ করে নিতে বলে পুলিশ বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। ফলে, অসহায় ওই নারী বিচারের আসায় স্থানীয় ব্যক্তি ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
অভিযোগ, পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, তানোর পৌর এলাকার মাসিন্দা হলদার পাড়া গ্রামের কৃষ্ণ হলদারের পুত্র সমাজ প্রধান শংকর ওরফে পরিমল দীর্ঘিদন ধরে একই গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারীকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো।
সমাজ প্রধানের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ১০ বছর আগে ওই নারীকে সমাজ চ্যুত করে এলাকা ছাড়া করা হলে ওই নারী ঢাকায় চলে যান। ১০ বছর ঢাকায় থাকার পর গত ৩ মাস আগে গ্রামে ফিরে আসলে সমাজ প্রধান ওই নারী আবারো কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই নারীর পুত্র (১৯) কে চোর আখ্যা দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে কালীগন্জ বাজারের একটি ঘরে বেধে রেখে মারপিট করেন সমাজ প্রধানসহ তার লোকজন।
খবর পেয়ে ওই নারী তার সন্তানকে বাচাতে ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও মারপিট করে জোর পূর্বোক চোর স্বীকারক্তি নিয়ে ২০ হাজার টাকা ৬ দিনের মধ্যে পরিষধের নির্দেশ দিয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্পে মা ছেলের স্বাক্ষর নেন সমাজ প্রধান।
এব্যাপারে সমাজ প্রধান শংকর অরফে পরিমল বলেন, ওই নারীর ছেলে গ্রামের জৈনক ব্যক্তির মোবাইল ফোনসহ ৩২ হাজার টাকা চুরি করেছে এবং ২০ হাজার টাকা চুরি করেছে। ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হওয়ায় মা ছেলে ২জনের ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা তানোর থানার এসআই নিজাম উদ্দীন বলেন, সমাজ চ্যুত ওই নারী গ্রামের লোকজন সামনে ২০ হাজার টাকা দিতে চেয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেছে তাই বিষয়টি স্থানীয় ভাবে আপোষ করতে বলা হয়েছে।