রাজশাহীর পুঠিয়ায় ক্লিনিকের বিরুদ্ধে সিজারে সন্তান প্রসব করার সময় আসমা বেগম (২৫) নামের একনারীর মূত্রনালি কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না। বরং দিন দিন তার অবস্থার অবনতি দেখা দিচ্ছে। এতে পরিবারের লোকজন অসহায় হয়ে পড়েছেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগির স্বামি বিচার চেয়ে থানায় তিনজনের নামে অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা: মেরিনা আকতার, ক্লিনিক মালিক রুবেল মন্ডল ও সহযোগি সাগর আহম্মেদ।
ঘটনাটি গত ১০ আগস্ট উপজেলা সদরের ফাতেমা ক্লিনিকে ঘটে। আর গত ৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগি আসমা বেগম সদর ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামের তাসিব আলীর স্ত্রী।
ভুক্তভোগির স্বামি তাসিব আলী বলেন, তার স্ত্রী গর্ভবতী ছিল। হটাৎ গত ১০ আগস্ট পেটে যন্ত্রনা হলে ওই ক্লিনিকে নিয়ে যায়। পরে সেখানে থাকা চিকিৎসক মেরিনা আকতার ও ক্লিনিক মালিক রুবেল মন্ডল প্রাথমিক পরিক্ষা শেষে বলেন, বাচ্চার পজিশন ভালো নয়, জরুরি ভাবে অপারেশন করাতে হবে। তাদের নির্দেশ মোতাবেক ওইদিন সন্ধ্যায় স্ত্রীর সিজার করা হয়। কিন্তু সিজারের পর থেকে তার প্রসব ঝরা শুরু হয়।
তারা বলেছেন এটা কিছু দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। এদিকে দিনদিন স্ত্রীর অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। পরে তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান তার মূত্রনালি কাটা। বর্তমানে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
বিষয়টি ওই ক্লিনিক মালিককে অবহিত করা হলে তিনি আমাকে চুপ থাকতে বলেন এবং বিষয়টি কাউকে না বলতে হুমকি দেয়।
তাসিব আলী বলেন, আমরা অসহায় মানুষ তাই অভিযুক্তদের সঠিক বিচার চেয়ে তিনজনের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছি
তবে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মেরিনা আকতার বলেন, সিজারের সময় ওই নারীর মূত্রনালি কেটেছে এটা মিথ্যা। গর্ভাবস্থায় রোগি ও বাচ্চার পজিশন খুবই ঝুকিপূর্ণ ছিল। বিষয়টি তাদের জানিয়েছি।
তিনি বলেন, বাচ্চাটির মাথা মূত্রথলির দিকে ঢুকে যায়। এতে বাচ্চার মাথার সাথে মূত্রনালি ও সাথে পাজরের হাঁড়ে ঘর্ষণের ফলে সেখানে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। আমি তাদের বলেছি পরবর্তিতে অপারেশনে সেটা স্বাভাবিক হবে। তবে শুনেছি ওই পরিবার থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে ক্লিনিক মালিক রুবেল মন্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়ায় যায়নি। ফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও তার উত্তর দেননি।
এ ব্যাপারে থানার ওসি তদন্ত আব্দুল বারী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সিজারের সময় মূত্রনালি কেটে ফেলা সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টির তদন্ত কাজ শুরু করেছি। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।