আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর লন্ডনে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদান শেষে লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের লক্ষ্যে একই দিন বিকেলে নিউ ইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মিরা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাবেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর কথা ছিল ১৮ সেপ্টেম্বর, কিন্তু রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদানের ফলে নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর তারিখ একদিন পিছিয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে পৌঁছেই প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ত সময় কাটবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯ সেপ্টেম্বর লন্ডনে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেবেন। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে হাসিনার। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষে লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি।
এবারে জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশন চলাকালে ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্ক পর্বে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য রাখবেন। প্রতিবারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বক্তৃতা দেবেন।
ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধে টেকসই সমাধানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব মতামত তুলে ধরবেন। এছাড়া টিকা ও প্রতিষেধকের ন্যায্য বণ্টন, রোহিঙ্গা সংকটের সুষ্ঠু সমাধান, নিরাপদ অভিবাসন, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কোভিড-১৯ জনিত কারণে, এবার কোনো সাইড ইভেন্ট জাতিসংঘ সদর দপ্তরের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত হবে না। তবে, রোহিঙ্গা সমস্যা এবং টেকসই আবাসন বিষয়ে পৃথক দুটি সাইড ইভেন্ট আয়োজন করবে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সাইড ইভেন্ট ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী উক্ত সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন।
জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল আগমী ২০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অন্যান্য অধিবেশন ছাড়াও ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের ফাঁকে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় যোগ দেবেন। ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন ছাড়া সাইডলাইনে টেকসই আবাসন বিষয়ে আরেকটি কর্মসূচি হবে।
বাংলাদেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সকল অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের প্রতিপাদ্য হল 'একটি অশ্রুসিক্ত মুহূর্ত: ইন্টারলকিং চ্যালেঞ্জের রূপান্তরমূলক সমাধান'।
নিউ ইয়র্ক ভ্রমণের আগে প্রধানমন্ত্রী ১৫ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য ভ্রমণ করবেন। নিউ ইয়র্কের সফর শেষে তিনি ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করবেন। ওয়াশিংটন ডিসি সফর শেষে দেশে ফিরবেন শেখ হাসিনা।
এদিকে, আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সামনে শান্তি সমাবেশ করবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। এছাড়াও ২৪ সেপ্টেম্বর অ্যাস্টোরিয়া ওয়ার্ল্ড ম্যানর-এ দুপুর ১২টায় ভার্চুয়াল নাগরিক সংবর্ধনা আয়োজন করেছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের বিতর্কিত কয়েকজন কর্মি ভার্চুয়াল নাগরিক সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে নানা রকম বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। একই দিনে একই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল নাগরিক সংবর্ধনার একই রকমের পোষ্টার তৈরি করে নিজেদের ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছেন। এসব ভূয়া প্রচার থেকে সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ।