০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০২:৪৭:২৮ অপরাহ্ন
মোহনপুর হাসপাতালে যে কারণে নার্সকে হাতুড়িপেটা করে যুবক!
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৯-২০২২
মোহনপুর হাসপাতালে যে কারণে নার্সকে হাতুড়িপেটা করে যুবক!

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত অবস্থায় এক জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্সকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত যুবক শনাক্ত করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই যুবক সনাক্ত করা হয়। এর তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেয়া হয়েছে। তবে পুলিশ তাকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।


বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোহনপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই নার্সের মাথায় ছয়টি সেলাই পড়েছে। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


হামলার শিকার ওই নার্সের নাম শিলা প্রামাণিক (৩০)। তাঁর বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার সাবাইহাটে। তাঁর স্বামীর নাম বিধান পণ্ডিত। তিনি ছয় বছর ধরে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত।


স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, নার্স শিলা প্রামাণিক নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের দ্বিতীয় তলায় গাইনি পরীক্ষার জন্য কাজ করছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে মাস্ক পরা এক যুবক ওই নার্সকে উপর্যুপরি হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন এবং তাঁর গলা চেপে ধরেন। এ সময় তিনি চিৎকার করে সহযোগীদের ডাকতে থাকেন। হাসপাতালে কর্মরত ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে ওই যুবক হাতুড়ি ফেলে পালিয়ে যান।


মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরিফুল কবির বলেন, ওই যুবককে তাঁরা কেউই চেনেন না। এমনকি শিলাও চেনেন না। কী কারণে এমনটা করেছেন, এটাও তাঁরা জানেন না। শিলা এখানে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে জানাতে পারতেন। কিন্তু এ ধরনের হামলা কেন? এখানে অনেকে সেবা দিতেই তো ভয় পাবেন। তাঁরা এ ঘটনার বিচার চান।


উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, শিলা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর মাথায় ছয়টা সেলাই পড়েছে। এ ছাড়া আরও কিছু জায়গায় আঘাত রয়েছে। সেগুলোও পরীক্ষা করা হচ্ছে। শুক্রবার সেগুলোর প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।


এদিকে, এ ঘটনায় এক তরুণকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করেছে পুলিশ। ওই যুবকের নাম মেহেদী (২১)। তিনি মোহনপুর উপজেলার সইপাড়া গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। সিসিটিভি ফুটেজে হামলার পর তাঁকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে আসামি করে মামলা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।


মোহনপুর থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, হামলার ঘটনার পরই তাঁরা হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। সেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এক যুবক শনাক্ত করেছেন। পরে এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।


মেহেদী হাসানের পরিবারের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তাঁর বাবা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলে নেশা করেন। তাঁর মাথা ঠিক নেই। তাঁর ছেলে মাঝেমধ্যেই এমন করেন। এছাড়াও কয়েকদিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যায় মেহেদী। সে সময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ওই নার্স বলে শুনেছি। এ কারণেও সে এ ঘটনা ঘটাতে পারে।


রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ওখানে যিনি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন, তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যও আসেননি। একেবারে হাসপাতালের বাইরের একজন মানুষ। যেভাবে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারত। ওই নার্সকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর মাথায় আঘাত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বলেছের্ন

শেয়ার করুন