জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের রাষ্ট্রীয়ভাবে শেষকৃত্য হচ্ছে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর)। এ উপলক্ষে টোকিওতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিচ্ছেন বিশ্ব নেতারাসহ চার হাজার মানুষ। অনুষ্ঠানের এ আয়োজনে সাধারণ মানুষের ঘোর আপত্তি ছিল। তবে দীর্ঘদিন দেশের জন্য কাজ করে যাওয়া শিনজো আবের এই রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যের আয়োজন সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।
রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত ইভেন্টটি, ৫৫ বছরের মধ্যে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রথম ঘটনা। সমালোচকরা বলেন যে, এটির কোনো আইনি ভিত্তি নেই। শিনজো আবের শেষকৃত্যে প্রায় ১ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ইয়েন খরচ হচ্ছে, যা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যের চেয়েও অনেক বেশি।
যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে, জাপান শুধু একবার একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করে। ১৯৬৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইয়োশিদাকে এ সম্মান দেওয়া হয়। তিনি যুদ্ধ থেকে দেশটির পুনরুদ্ধারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
গত ৮ জুলাই পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নারাতে একক বন্দুকধারীর হামলায় নির্বাচনী প্রচারের বক্তৃতার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। চার দিন পরে আবের একটি ব্যক্তিগত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং তার মৃতদেহ দাহ করা হয়।
ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সি রাজধানীতে বিশেষ করে নিপ্পন বুডোকান হলের আশেপাশে যেখানে অনুষ্ঠানটি হচ্ছে সেখানে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করতে ২০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছে।
এদিকে, অনুষ্ঠানস্থলের কাছাকাছি একটি পার্কে, অনেক মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করছেন।
অপরদিকে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার বিরোধীরা বারবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সংসদ ভবন এবং অন্যান্য স্থানে সমাবেশ করেন এবং অনুষ্ঠানটি বাতিলের দাবিতে মামলাও করেন তারা।
দুপুর ২ টায় অনুষ্ঠানে, প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং তার পূর্বসূরি, ইয়োশিহিদে সুগা, যিনি বহু বছর ধরে প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসাবে আবেকে সমর্থন করেছিলেন। তাদের দুইজনের বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
৭০০ বিদেশি অতিথি অংশ নিচ্ছেন এতে শিনজো আবের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যে। তাদের মধ্যে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সভাপতি টমাস বাখও রয়েছেন।
জাপানের ইতিহাসের পাতায় আগেই জায়গা করে নিয়েছিলেন শিনজো আবে। ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যুদ্ধোত্তর অন্য যেকোনো নেতার চেয়ে বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।