২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৩:৪০:৫০ অপরাহ্ন
গোদাগাড়ীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগের অভিযোগ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১০-২০২২
গোদাগাড়ীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগের অভিযোগ

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কশিমপুর এ, কে ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধাম শিক্ষক গোলাম কবির আখতার জাহানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে নিয়োগ হওয়া ও স্ব-পদে বহাল থেকে সহকারী সিনিয়র এক শিক্ষকের টিউশন ফি-ভাতা বন্ধ ও প্রাপ্ত উচ্চতর স্কেল থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে।

ওই শিক্ষককের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদে কাশিমপুর এ, কে ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া প্রধান শিক্ষকের চাকরি থেকে বরখাস্ত চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

শনিবার (৮ অক্টোবার) বেলা ১১ টার দিকে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

লিখিত বক্তেব্যে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক অবসরে গেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হন অবৈধভাবে সহকারী প্রধানে নিয়োগ প্রাপ্ত গোলাম কবির আখতার জাহান।

অবৈধ ভাবে নিয়োগের বিভিন্ন বিবরণ তুলে ধরে বলেন, গোলাম কবির আখতার জাহান প্রথম নিয়োগ ২০০১ সালের ১১ এপ্রিল সহকারী শিক্ষক বি.পি এড হিসেবে। যা গত ১৯ জানুয়ারী ২০০১ তারিখের দৈনিক সোনালী সংবাদ’ পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক প্রথম নিয়োগটি অবৈধ। কেননা পত্রিকার বিজ্ঞাপন মোতাবেক তার বিপিএড সনদ ছিলনা। বিপিএড সনদ ছাড়াই তিনি উক্ত পদে নিয়োগ গ্রহন করেন।

পত্রিকায় উল্লেখিত বিজ্ঞাপনে সরকারী বিধি মোতাবেক বিপিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বা প্রশিক্ষণরত যোগ্যতার কোন প্রমাণ পত্র ছিলনা। গত ২৭ অক্টোবার ২০১১ ইং তারিখের উপ-পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল, রাজশাহী এর তদন্ত রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে।

দ্বিতীয় নিয়োগ ‘সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১০ এপ্রিল ২০০২ ইং তারিখে। এ নিয়োগটিও অবৈধ, কেননা তৎকালীন বিধি মোতাবেক (২৪অক্টোবার ১৯৯৫ তারিখের পরিপত্র অনুযায়ী) সহকারী প্রধান শিক্ষক হতে হলে তার অভিজ্ঞতা লাগতো ১২ বছর, তা পূর্ণ না হওয়ার পূর্বেই অবৈধ ভাবে নিয়োগ নিয়েছেন। তখন তার চাকুরীর অভিজ্ঞতা ছিল ১২ বছরের স্থলে মাত্র ১০ মাস। তার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার স্থান স্কুলের নাম। উল্লেখ থাকলেও স্কুলে কোন নিয়োগ পরীক্ষা হয়নি এবং রেজুলেশনেও স্থানের নাম উল্লেখ নাই।

সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পর ২ বৎসর শিক্ষানবীজ কাল পূরন করতে হয়, ম্যানুয়াল অনুযায়ী কিন্তু তা পূরণ হয়নি। ২ বৎসর পর স্থায়ীত্ব করন করতে হয় এবং তার কার্যবিবরণী করতে হয় সেটিও করা হয়নি।

তৎকালীন বিধি অনুযায়ী (১৯৯৫ এর পরিপত্র যা ২০০৫ পর্যন্ত বলবৎ) অভিজ্ঞতা ১২ বৎসরের স্থলে মাত্র ১০ মাসে এই নিয়োগ, সে মতে সম্পূর্ণ অবৈধ ছিল।
এছাড়াও সহাকারী প্রধানের বিজ্ঞপ্তির মিয়াদ ১৫ দিন হতে হবে, সেখানে মাত্র ৭ দিন ছিল। তার আবেদন পত্রে বাছাই কমিটির সভাপতি কর্তৃক বৈধ লেখা নাই এবং সভাপতির স্বাক্ষর নাই। নিয়োগ পরীক্ষার টেবুলেশন সীট নাই বা ছিল না এবং রেজুলেশনে উল্লেখ নাই।

বর্তমানে যে টেবুলেশন সীট উপস্থাপন করা হয়েছে, সে টেবুলেশন সীট জালিয়াতির মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত। নিয়োগ পরীক্ষা স্কুলে হওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও সেই পরীক্ষা স্কুলে হয়নি। নেজুলেশনে স্থান ও টেবুলেশন সীটের উল্লেখ নাই।

সে বর্তমানে তার বৈধতার যে প্রমান দেখাবে তাহা ০৮ জানুয়ারী ২০০৫ ইং তারিখের পরের পরিপত্র। কিন্তু তিনি নিয়োগ নিয়েছেন ১০এপ্রিল ২০০২ ইং তারিখে। বিধায় ২০০৫ এর পরের পরিপত্র তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবেনা ।

পরবর্তীতে ২ জুলাই ২০১৫ সালে প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক অবসরে গেে অবৈধ ভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত গোলাম আখতার জাহান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হন।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং তারিখে শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক জালিয়াতির মাধ্যমে এম.পি.ও ভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন ফেরত দেয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু কাশিমপুর এ, কে, উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম কবির আখতার জাহান বিজ্ঞপ্তিটি গোপন করে রাখেন এবং তিনি নিজেই ঐ বিজ্ঞস্তির আওতায় পড়েও তা কার্যকর করেন নি। এটাও আইন বহির্ভুত ও জালিয়াতির প্রমান।

সহকারী সিনিয়র প্রধান শিক্ষক তার এসব অনিয়মের প্রতিবাদ ও অপসারণ চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত হলেও এবং প্রমাণ পেলেও এখন পর্যন্ত ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তিনি শিক্ষা মন্ত্রী ও প্রধান মন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করেন এবং জালিয়াতী করে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অপসারনের দাবি জানান।

এসব অভিযোগের বিষয়ে কাশিমপুর এ.কে ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান গোলাম কবির আখতার জাহানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই শিক্ষকও প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য আবেদন করে। নিয়োগ কমিটি তার আবেদনে ও যোগ্যতায় ত্রুটি পাওয়ায় তার আবেদন বাতিল করে। পরবর্তিতে আমি নিয়োগ পেলে সে আমাকে জালায়তির প্রমান করার জন্য দীর্ঘদিন থেকে লেগে আছে। তার এসব অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।


শেয়ার করুন