১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:২০:৪৬ অপরাহ্ন
ঢাকা মহানগরকে সু-সংগঠিত ও সতর্ক থাকার নির্দেশ
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৫-২০২২
ঢাকা মহানগরকে সু-সংগঠিত ও সতর্ক থাকার নির্দেশ

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে আরও সুসংগঠিত করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এ দুই শাখাকে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিএনপির কোনো উসকানিতে পা না দেওয়ার বিষয়েও দলের নেতাদের সাবধান করেন শেখ হাসিনা। এছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে বিতর্কিতদের জায়গা না দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগে যেন কোনো ভূমিদস্যু, জামায়াত, বিতর্কিত ব্যক্তি ঢুকতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে- ‘দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো’।

রোববার ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শীর্ষ চার নেতাকে গণভবনে ডেকে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেলা ১১টায় গণভবনে যান। একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত এই চার নেতার সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমরা আমাদের ইউনিট কমিটিগুলোর তালিকা নেত্রীর কাছে জমা দিয়েছি। এছাড়া আমরা থানা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুরু করার বিষয়ে নেত্রীর অনুমতি চেয়েছি। আমরা নেত্রীকে বলেছি, আগস্টের আগেই আমরা এই সম্মেলনগুলো শেষ করতে চাই। তিনি আমাদের বলেছেন, ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলন করে কমিটি জমা দিতে। একই বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী যুগান্তরকে বলেন, এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। করোনার কারণে অনেক দিন নেত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথা হয়নি। তাই তিনি আমাদের ডেকেছিলেন।

বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল সামনে রেখে দল গোছানোর নির্দেশনা দেন। এ সময়ে তিনি উপস্থিত নেতাদের কাছে মহানগরে সাংগঠনিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চান। নেতারা তাদের ইউনিট কমিটিগুলোর তালিকা ডাটাবেজ আকারে নেত্রীর কাছে তুলে দেন। এ সময় তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে থানা-ওয়ার্ড সম্মেলন ব্যাপকভাবে শুরুর ব্যপারে দলীয় সভাপতির অনুমতি চান।

সূত্রটি জানায়, আগামী নভেম্বরের মধ্যেই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এ দুই শাখার অধীনে সব কমিটি গঠনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। উত্তরের নেতারা আজ বর্ধিত সভা করে সম্মেলনের কাজ শুরু করবেন। তবে দক্ষিণের নেতারা কিছুটা ধীরে এগুতে চান। তারা চাইছেন, আগামী সেপ্টেম্বরে সম্মেলনের কাজ শুরু করতে। এদিকে উত্তরের নেতারা একসঙ্গে একটি থানা ও ওই থানা অন্তর্গত সব ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন একসঙ্গে কথার অনুমতি চেয়েছেন দলীয় প্রধানের কাছে।

এছাড়া নগর আওয়ামী লীগের নেতারা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী বিভিন্ন জায়গা থেকে তদবির আসার কথা জানিয়ে প্রভাবমুক্ত হয়ে কমিটি গঠন করার কথা বলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের আওয়ামী লীগের কমিটিতে রাখতে হবে।

বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রামে মহানগর আওয়ামী লীগের করণীয় কী এমন প্রশ্ন করেন নগরের নেতারা। জবাবে নেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক দল না হলেও দেশ গণতান্ত্রিক ধারায় এগুচ্ছে। সেক্ষেত্রে আন্দোলনকে আমরা স্বাগত জানাব। কিন্তু আন্দোলনের নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে সমুচিত জবাব দিতে হবে। আন্দোলনের নামে এদেশে আর ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে দেওয়া হবে না। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) পানি ঘোলা করে ফায়দা লুটতে চায়। কিন্তু তাদের সেই সুযোগ দেওয়া যাবে না।

এছাড়া বৈঠকে করোনা মহামারির সময়ে দেশের অর্থনীতি সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়াসহ যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে দেশ ও দেশের মানুষকে ভালো রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান নগর আওয়ামী লীগের নেতারা। এ সময় করোনাকালে মহানগর আওয়ামী লীগের নানা কর্মকাণ্ডের কথাও প্রধানমন্ত্রীকে জানান নেতারা। এ সময় তারা করোনাকালীন সময়ে নগর আওয়ামী লীগের মৃত্যুবরণকারী নেতাদের নামের তালিকা এবং যারা সহযোগিতা চেয়েছেন তাদের আবেদনপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে দেওয়া হয়।

২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে গঠিত কমিটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩০ নভেম্বর। সাধারণত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে ঢাকা মহানগরের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

শেয়ার করুন