সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলা সদরের জামতৈল রেলস্টেশনে আওয়ামী লীগ-পুলিশের সঙ্গে বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অন্তত ছয় পুলিশ সদস্য সহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করা হয়েছে ৫টি ককটেল। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে এ ঘটনাটি ঘটে।
কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাতে রাব্বি উত্থান জানান, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে কামারখন্দ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া। প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে শান্তিপূর্ণ ভাবে নেতাকর্মীরা ফেরার সময় কামারখন্দ উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ ঘটনায় পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছোড়ে।
এ ঘটনায় আমাদের ১৪-১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে পুলিশের গুলিতে তিনজন নেতা গুলিবিদ্ধ হয়। তিনি আরও জানান, এসময় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী পাপিয়া ও জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদের গাড়ী সহ ৪টি গাড়ী ভাংচুর করে।
ঘটনাটি সম্পর্কে কামারখন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন শেখ বলেন, বিএনপির অভিযোগ সঠিক নয়। বরং তাদের মধ্যেই গ্রুপিং রয়েছে। দুই গ্রুপে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে স্টেশন এলাকায় আওয়ামী লীগের ৬-৭ জন নেতাকর্মীর ওপর তারা হামলা চালিয়ে আহত করে।
এদিকে কামারখন্দ থানার ওসি নুরন্নবী প্রধান বলেন, ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে যায়। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। বাধ্য হয়ে ছররা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সিরাজগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) আদনান মুস্তাফিজ সহ তাদের ৬ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনিও আহত হয়েছেন বলে জানান।
সিরাজগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) আদনান মুস্তাফিজ বলেন, বিএনপি তাদের প্রোগ্রাম শেষ করে জামতৈল স্টেশন এলাকায় দোকান-পাট ও মোটর সাইকেল ভাঙচুর শুরু করে। বাঁধা দিতে গেলে তারা পুলিশের উপর ইট-পাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্রও ছিল। তাদের হামলায় আমি ও থানার ওসিসহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হই। পরে জামতৈল গ্রামীন ব্যাংক সংলগ্ন এলাকার এক ঝোপের মধ্যে থেকে ৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।