২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৭:০৯:৫৫ অপরাহ্ন
ভোগান্তি কমাতে আরেকটি পাসপোর্ট অফিস ঢাকায়
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০২-২০২৩
ভোগান্তি কমাতে আরেকটি পাসপোর্ট অফিস ঢাকায়

রাজধানী ঢাকায় গ্রাহকদের ভোগান্তি কমাতে ও দ্রুত সেবা দিতে মোহাম্মদপুরে চালু হচ্ছে আরেকটি পাসপোর্ট অফিস। ১ মার্চ থেকে এই সেবা চালু হবে। ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের গ্রাহকরা এই সুবিধার আওতায় আসবেন। এটি চালু হলে ঢাকায় পাসপোর্ট অফিসের সংখ্যা হবে চারটি। আগারগাঁও, উত্তরা ও কেরানীগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস এতদিন সেবা দিয়ে আসছিল। বিপুলসংখ্যক গ্রাহককে সেবা দিতে এতদিন তাদের হিমশিম খেতে হয়েছে। মোহাম্মদপুর পাসপোর্ট অফিস চালু হলে গ্রাহকদের ভোগান্তি কমে আসবে। এ ছাড়া দ্রুত পূর্বাঞ্চলের গ্রাহকদের সেবা দিতে বনশ্রীতে আরেকটি পাসপোর্ট অফিসের যাত্রা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর (ডিআইপি) সূত্রে জানা গেছে, ১ মার্চ থেকে চালু হওয়া মোহাম্মদপুর পাসপোর্ট অফিসের নাম হবে পাসপোর্ট অফিস, ঢাকা পশ্চিম। এ অফিসের অধীনে থাকবে সাভার, ধামরাই, মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুস সালাম, শাহ আলী, হাজারীবাগ ও নিউমার্কেট থানা এলাকা। এ আট থানার গ্রাহকরা এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। ঢাকায় চালু থাকা তিনটি পাসপোর্ট অফিসে আবেদনকারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় একদিকে যেমন জায়গার সংকুলান হচ্ছে না, অন্যদিকে সেবা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তারা। মোহাম্মদপুর পাসপোর্ট অফিস চালু হলে এই ভোগান্তি অনেকটা কমে আসবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকায় তিনটি পাসপোর্ট অফিস চালু রয়েছে। ১ মার্চ থেকে মোহাম্মদপুর অফিসটি চালু হচ্ছে। এ জন্য কম্পিউটার, সার্ভার সংযোগ, চেয়ার-টেবিল সবকিছু বিভিন্ন কক্ষে বসানো হয়েছে। এ নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের সংখ্যা হবে চারটি। শিগগিরই আরও তিনটি অফিসের কার্যক্রম শুরু করার প্রক্রিয়া চলছে। এ সাতটি অফিস একযোগে কাজ শুরু করলে পাসপোর্ট অফিসে মানুষের যেসব হয়রানির স্বীকার হতে হয়, সেগুলো আর থাকবে না। দিতে হবে না বায়োমেট্রিক ও ফিঙ্গারের জন্য দীর্ঘলাইন। অল্প সময়ে পাসপোর্ট জমা ও ডেলিভারি নিতে পারবেন। এতে সেবাগ্রহীতাদের সময় বাঁচবে কয়েকগুণ।

 

সেবাগ্রহীতারা বলছেন, অনলাইনে আবেদন করার পর দীর্ঘ যানজট ঠেলে ক্লান্ত শরীর নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে আসতে হতো। এরপর হয়রানির শেষ নেই। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে ওইদিনই বায়োমেট্রিক ও ফিঙ্গার দেওয়া যাবে কি না তা নিয়েও ছিল সংশয়। এমনকি পাসপোর্ট হাতে পেতেও হয়রানির কমতি নেই। যদি আরও কার্যালয় বাড়ানো হয়, তাহলে এসব ভোগান্তি থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি মিলবে। যখন মানুষ দেখবে ঝামেলা ছাড়াই বাসার কাছাকাছি পাসপোর্ট করা যাচ্ছে, তখন তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসবে।

ঢাকায় বসবাসকারীদের পাসপোর্ট সেবার মান বৃদ্ধি ও পাসপোর্টপ্রাপ্তি সহজ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ গত ৩০ জানুয়ারি সাতটি পাসপোর্ট অফিসের আওতা পুনর্র্নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করে। পুনর্র্নির্ধারিত পাসপোর্ট অফিসগুলো হলো- আগারগাঁও বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, কেরানীগঞ্জের আঞ্চলিক অফিস, উত্তরা আঞ্চলিক অফিস, বনশ্রীর ঢাকা-পূর্ব অফিস, মোহাম্মদপুরের ঢাকা-পশ্চিমের অফিস, ঢাকা সেনানিবাসের অফিস ও সচিবালয় অফিস। আগারগাঁও বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের আওতায় থাকবে শেরেবাংলা নগর, মিরপুর, কাফরুল, রুপনগর, গুলশান, বনানী, শাহবাগ, ধানমন্ডি ও কলাবাগান থানা। কেরানীগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অধীনে থাকবে শ্যামপুর, কদমতলী, কোতোয়ালি, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ মডেল, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ, লালবাগ, চকবাজার, কামরাঙ্গীরচর, বংশাল ও ওয়ারী থানা। উত্তরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের আওতায় থাকবে উত্তরা পূর্ব, উত্তরা পশ্চিম, উত্তরখান, দক্ষিণখান, তুরাগ, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, আশুলিয়া, পল্লবী ও ভাষানটেক থানা।

বনশ্রীর ঢাকা পূর্ব পাসপোর্ট অফিসের অধীনে থাকবে ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, মুগদা, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, রামপুরা, রমনা, মতিঝিল, পল্টন, বাড্ডা, ভাটারা, তেজগাঁও, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও হাতিরঝিল থানা। মোহাম্মদপুরের ঢাকা পশ্চিম পাসপোর্ট অফিসের অধীনে থাকবে সাভার, ধামরাই, মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুস সালাম, শাহ আলী, হাজারীবাগ ও নিউমার্কেট থানা। ঢাকা সেনানিবাসের পাসপোর্ট অফিসের সেবা নিতে পারবেন ক্যান্টনমেন্ট থানার অধীনে বসবাসরত নাগরিকরা। এ ছাড়া সচিবালয়ের পাসপোর্ট অফিসের সেবা নিতে পারবেন শুধু সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পোষ্যরা।

ডিআইপির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও অর্থ) উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, ১ মার্চ থেকে মোহাম্মদপুরে ঢাকা পশ্চিম পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে। এ অফিসের সেবা পাবে আটটি থানার বাসিন্দারা। এ থানাগুলো আগে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের অধীনে ছিল। এ থানাগুলো মোহাম্মদপুরের অধীনে চলে যাওয়ায় আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের চাপ অনেকাংশ কমে যাবে।

উত্তরা ও কেরানীগঞ্জ অফিস দুটি দুই কর্নারে হওয়ায় আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের ওপর প্রচুর চাপ পড়ত। জনগণের দৌরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সরকার মোহাম্মদপুর ও বনশ্রীসহ সাতটি অফিসের আওতা পুনর্র্নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করে। সে অনুযায়ী মার্চে মোহাম্মদপুর পাসপোর্ট অফিস চালু করা হচ্ছে। এ ছাড়া আগামী এপ্রিলে বনশ্রী পাসপোর্ট অফিসও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

শেয়ার করুন