রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর মৃধা মুনসুর ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তাদের অব্যহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এদের মধ্যে আবুল কালাম আজাদ তাহেরপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
উপজেলার সোনাডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের হল রুমে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি। সভা উপস্থাপনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল, সহ-সভাপতি মতিউর রহমান টুকু, সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ কুমার প্রতীক দাশ রানা, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ, দপ্তর সম্পাদক নূরুল ইসলাম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হাকিম প্রামানিক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আশিকুর রহমান সজল প্রমূখ।
অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল জানান, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাহেরপুর পৌরসভার সভাপতি আবু বক্কর মৃধা মুনসুর এবং সাধারণ সম্পাদক মেয়র আবুল কালাম আজাদকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সেই সাথে পৌরসভা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক কাউসার আলীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মাহাবুর রহমান বিপ্লবকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
গোলাম সারওয়ার বলেন, দলীয় পদ পদবী ব্যবহার করে সংগঠনের কার্যক্রম ও নেতাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে অপপ্রচার করে আসছিল তাহেরপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশহী-৪ আসনের সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সভা সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, পৌরসভার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হওয়ার পরও তারা দলীয় কোন সভায় উপস্থিত থাকতেন না। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাথে তারা কোন সম্পর্ক না রেখে তাদের নিজস্ব রাজনীতির বলায় সৃষ্টি করেছে। এতে দলের ভিতরে বিভেদ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ সব কারণে তাদের দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি।
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে মেয়র অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এলাকায় আমার জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেটি দেখে আমার সম্মান হানি করার জন্য দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। যাতে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুসরন করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপজেলা পর্যায়ের পৌরসভা ইউনিট উপজেলা কমিটির অধিনে। সে ক্ষেত্রে তাদের অধিনের যে কোন ইউনিটের ব্যবহারে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য জেলা কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠাতে হবে। জেলা কমিটি সেটি বিবেচনায় নিলে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠাবে। কেন্দ্রীয় কমিটি সেটি বাস্তবায়ন করবে।
তিনি আরও বলেন, বাগমারা উপজেলা কমিটি একটি পৌরসভা ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তাদের দরীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে শুনেছি। তবে এখনো কোন সুপারিশের চিঠি পায়নি। পেলে পরবর্তি পদক্ষেপ নিব।