১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:৪৩:৫১ পূর্বাহ্ন
রাজশাহী সিটিতে মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি নেতা সাঈদ হাসান
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৫-২০২৩
রাজশাহী সিটিতে মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি নেতা সাঈদ হাসান

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলছে দলটি। তবে এই নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন বিএনপি নেতা সাঈদ হাসান। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফার ভাই।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন সাঈদ হাসান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা আছে। আমি সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছি। নির্বাচন করলে দলীয় বাধা আসবে। আবার নির্বাচনে জনগণের রায়ের প্রতিফলন হবে কি না, সেটিও একটা ব্যাপার। সবকিছু মিলিয়ে আমি ভাবছি। পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।’

সাঈদ হাসান রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। রাজশাহী কলেজের ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) ছিলেন তিনি। পরে রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি হন। সর্বশেষ ২০১১ সালে মহানগর বিএনপির (মিজানুর রহমান মিনু সভাপতি ও শফিকুল হক মিলন সাধারণ সম্পাদক) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাঈদ হাসান। তবে পরবর্তি কমিটিতে জায়গা না পেয়ে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এই বিএনপি নেতা।

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-২ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন ফরম তোলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর মিনু ও সাঈদ হাসান। বিএনপি দুজনকেই মনোনয়ন দেয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দুজনেই মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। পরে মিনুর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা হলে সাঈদ নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।

সাঈদের ভাই নাদিম এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তিনি রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে দুই বার বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।

নাদিমের ভাই সাঈদ রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লড়বেন, নগরে এমন আলোচনা কয়েক দিন ধরেই চলছিল। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের একাংশ কৌশলে সাঈদকে প্রার্থী করছে বলেও আলোচনা রয়েছে। সাঈদ হাসান ছাড়াও মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট এবং মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন ছিল।

২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বুলবুলের সঙ্গে সেবার দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন সুইট। তাই তাঁকে ঘিরেও এবার আলোচনা ছিল। যদিও প্রার্থী হওয়ার আগ্রহের বিষয়টি পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন সুইট ও মিলন।

সাঈদের প্রার্থী হওয়ার আগ্রহের বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা বলেন, ‘সাঈদ তো বিএনপির কমিটিতে নেই। আর বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। সাঈদ প্রার্থী হলেও আমাদের কিছু আসে যায় না। আমরা তো ভোটই দিতে যাব না।’

এ নিয়ে রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত মেয়র পদে প্রার্থী হতে চারজন ঘোষণা দিয়েছেন। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনিত দলের প্রসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় পার্টি মনোনিত নগরের আহবায়ক সাইফুল ইসলাম স্বপন, ইসলামী আন্দোলনের মহানগরের সহসভাপতি হাফেজ মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী ও বিএনপি নেতা সাঈদ হাসান। এদের মধ্যে তিনজন দলীয় মনোনয়নে এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চান।

মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, গণতান্ত্রীক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। আমরা চাই প্রতিদ্বন্দ্বীতা মূলক ভোট হক। এর মানে এই নয় যে বিএনপি নেতা ভোট করবেন আর আমরা ভয়ে ভিত হব। কারণ অতিতের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম বিএনপি প্রকাশ্যে ভোট বর্জণের ঘোষণা দিলেও ভিন্ন কৌশলে তারা ভোটের মাঠে থাকবে। তাই আমরা প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক নির্বাচন হবে বলে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রার্থী জনগণের প্রার্থী। তিনি সেটি প্রমান করেছেন বিগত দিনে তার কার্যক্রমে। তাই রাজশাহীর মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন, ভোটাররা আমাদের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আমরা আশা বাদি এবং ভোটাররা অপেক্ষা করছেন ২১ জুন আমাদের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে বিপুল ভোটে পুনরায় নির্বাচিত করে প্রমান করে দেবে তারা উন্নয়নের পক্ষে আছেন।

শেয়ার করুন