২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:০৮:৫১ অপরাহ্ন
শিক্ষার্থীকে বলাৎকার; গ্রাম্য শালিসে আদায় করা জরিমানার টাকায় মন্দিরের উন্নয়ন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৬-২০২৩
শিক্ষার্থীকে বলাৎকার; গ্রাম্য শালিসে আদায় করা জরিমানার টাকায় মন্দিরের উন্নয়ন

নওগাঁর রাণীনগরের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মানসিক বিকারগ্রস্থ ছাত্রকে এক নীরাঞ্জন ভাস্কর (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ বলাৎকার করার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে ১০হাজার টাকা জরিমানা করেছে ইউপি মেম্বার ও স্থানীয় মাতবররা। পরে সেই টাকা দান করা হয়েছে স্থানীয় একটি মন্দিরের উন্নয়নের কাজে। ঘটনাটি ঘটেছে সদর ইউনিয়নের খট্টেশ্বর গ্রামের পুরাতন হাটখলা এলাকায়।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৭জুন) পুরাতন হাটখলা এলাকার মৃত রতন সরকারের ছেলে নীরাঞ্জন ভাস্কর সকাল ১১টার দিকে মন্দির প্রাঙ্গনে খেলারত একই এলাকার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মানসিক বিকারগ্রস্থ ছাত্রকে প্রলোভন দেখিয়ে মন্দিরের এলাকায় বলাৎকার করে। এসময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পারেন। পরে ঘটনাটি গোপনে মিমাংসা করার চেস্টা করেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার আনছার আলী ও মাতবর শামীম হোসেন। অবশেষে গত শনিবার (১০জুন) রাতে এক গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে নীরাঞ্জন ভাস্করকে ৫ বার কান ধরে ওঠবস আর ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে স্থানীয় সমাজের মানুষদের ও দুই পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সেই জরিমানার ১০হাজার টাকা মন্দিরের উন্নয়নের জন্য দান করা হয়। তবে গ্রাম্য মাতবররা বলাৎকারী নীরাঞ্জন ভাস্করের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে নামমাত্র ১০ হাজার টাকার কথা প্রকাশ করছে বলে অনেকের অভিমত। এছাড়া বৃদ্ধ নীরাঞ্জন ভাস্করের দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি চান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকেই।


ওই শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, তিনি গরীব মানুষ আর তাকে ওই সমাজেই বসবাস করতে হবে তাই ওই তাদের মতের বাহিরে কোন কিছু করতে চাই না। তাই এই বিষয়ে সমাজপতিরা যে সিদ্ধান্ত নিবেন তাতেই আমার সম্মতি।

স্থানীয় মেম্বার আনছার আলী বলেন, স্থানীয় মাতবর শামীমসহ আরো অনেকেই গ্রাম্য শালিস বসিয়ে আমাকে ডাকলে সেখানে যাই। সেখানে দুই পক্ষের মানুষ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নীরাঞ্জনকে ১০হাজার টাকার জরিমানা করা হয় ও তাকে ৫ বার কান ধরে ওঠবস করানো হয়। পরে সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক জরিমানার ওই টাকা গত সোমবার হাটখলার মন্দিরের উন্নয়নের লক্ষ্যে দান করা হয়েছে এবং সেই টাকা দিয়ে মন্দিরের ইটও কিনে এনেছে তারা। একজন স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি হিসেবে এমন গ্রাম্য শালিস বসিয়ে তিনি বিচার করতে পারেন কিনা এই বিষয়ে জানতে চাইলে মেম্বার বিষয়টি গ্রামবাসীদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেস্টা করেন।

রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এমন ঘটনায় গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে কারো জরিমানা আদায় করা তো দূরের কথা গ্রাম্য শালিস কেউ ডাকতে পারেন না। তারা অবশ্যই আইনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে সহযোগিতা করতে পারেন মাত্র। আমি বিষয়টি ব্যক্তিগত ভাবে দেখছি আর ছেলের পরিবার নির্ভয়ে এখনোও পুলিশের সহযোগিতা নিতে পারেন।

শেয়ার করুন