২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৪:১৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
সংকট উত্তরণ সরকারের হাতেই: ফখরুল
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৭-২০২৩
সংকট উত্তরণ সরকারের হাতেই: ফখরুল

নির্দলীয় সরকারের বিষয়টি সংবিধানে সংযোজন করার দায়িত্ব সরকারের-এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। এটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে তাদের সদিচ্ছার ওপর। সরকারের যদি জনগণের ওপর কোনো ভালোবাসা থেকে থাকে, দেশের প্রতি তাদের যদি কোনো প্রেম থাকে তাহলে তাদের আলোচনা করেই একটা পথ বের করতে হবে। কারণ, সরকার চাইলে যেকোনো সময় সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে। এটা অতীতে দেশে হয়েছে। 

শনিবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন।

যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এখন এক দফার আন্দোলন শুরু করার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। 

তিনি বলেন, প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। জনগণও রাস্তায় নামছেন। আমাদের নতুন করে পদযাত্রার কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। আশা করি, এর মধ্যে এক দফায় আন্দোলন শুরু করব। গতবারের চেয়ে এবারের আন্দোলনের ধরন একটু ভিন্ন হবে। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনে আমরা চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে যেতে চাই।

গত শুক্রবার ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি ঠাকুগাঁওয়ে যে কথাটা বলেছিলাম-‘জামায়াতে ইসলামী একটা রাজনৈতিক দল, সে তার নিজস্ব ধারায় রাজনীতি করছে।’ মূল কথাটা হচ্ছে-সরকারের বিরুদ্ধে যারাই আন্দোলন করবে তাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। আমরা যুগপৎভাবে আন্দোলন করছি, জোটবদ্ধ আন্দোলন করছি না। প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল যারা মনে করে, এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত তারা করতে পারে এটা স্বাভাবিক। কমিউনিস্ট পার্টি নিজস্ব জায়গা থেকে আন্দোলন করছে, বাসদ নিজস্ব জায়গা থেকে আন্দোলন করছে। জামায়াতে ইসলামী তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে আন্দোলন করছে। এ রকম অনেক দল আছে, যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নেই, কিন্তু তারা তাদের মতো আন্দোলন করছে। আমরা তাদের সবাইকে স্বাগত জানিয়েছি।

‘জামায়াতে ইসলামী বিএনপির বি-টিম’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য নাচক করে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এগুলো বাজে কথা। তারা ইচ্ছা করে এসব কথা বলছে। জনগণই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের কথাগুলোর উত্তর দিয়ে দেবে। এবার জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনটা শুরু হয়েছে। আবার একটা ইস্যু তৈরি করে সেটাকে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়া। তবে এবার কোনো সুযোগ তারা পাবে না।

জাতিসংঘের শান্তি মিশনের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এসব কথা বলে আন্দোলনকে ডাইভারশন করতে চায়। রাজনৈতিক সংকট থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে লাভ হবে না। এবার আমাদের লক্ষ্য স্থির-এই অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।

ফ্রান্সের ঘটনাবলী ও ইউরোপের ডানপন্থিদের উত্থান সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র যদি ঠিকমতো চলতে না পারে তখনই এসব সমস্যা দেখা দেয়। পশ্চিমা বিশ্বকে ভিন্নভাবে দেখতে হবে। আমাদের দেশকে ভিন্নভাবে দেখতে হবে। কারণ পশ্চিমা বিশ্বে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। আমাদের এখানে সেটা নেই। যদি গণতন্ত্রকে স্পেস দেওয়া না হয়, নির্বাচন সুষ্ঠু না হয়, মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার না পায় তাহলে স্বাভাবিকভাবে ডানপন্থি, উগ্রপন্থি, জঙ্গিবাদ এগুলোর উত্থান হবেই। আন্তর্জাতিক বিশ্ব ও আমরা কেউই এখানে জঙ্গিবাদের উত্থান চাই না। আমরা কেউই এখানে ডানপন্থিদের চূড়ান্ত রূপের কাছে যেতে চাই না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

শেয়ার করুন