২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৭:৪৫:২৬ অপরাহ্ন
পুলিশ পরিদর্শক মামুনের লাশ জঙ্গলে নেওয়া ‘গাড়ির পার্টস কেনা হয় গাজীপুরে’
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৭-২০২৩
পুলিশ পরিদর্শক মামুনের লাশ জঙ্গলে নেওয়া ‘গাড়ির পার্টস কেনা হয় গাজীপুরে’

পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খানকে হত্যার পর যেই গাড়িতে করে লাশ জঙ্গলে নেওয়া হয়েছিল, সেই গাড়িটির পার্টস বা যন্ত্রাংশ গাজীপুর থেকেই কেনা হয়েছিল। এই হত্যার ঘটনায় আলোচিত আরাভ খানসহ আট আসামির বিরুদ্ধে মামলায় আদালতে সাক্ষ্যে এ তথ্য জানিয়েছেন ওই দোকানের কর্মচারী।


আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মনিন্দ্রমোহন নামের ওই ব্যক্তি আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। মনিন্দ্রমোহন গাজীপুরের জয়দেবপুর শিমুলতলা বাজারে একটি রেন্ট এ কারের দোকানের কর্মচারী।


তিনি আদালতকে জানান, তাদের রেন্ট এ কারের দোকানে বিভিন্ন মোটরপার্টস বিক্রি করা হত। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে কোনো একদিন তিন চারজন লোক ওই দোকান থেকে মোটরপার্টস কেনেন। এর ৪-৫ দিন পর পুলিশ গিয়ে তিনজনের ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করে, এদেরকে চেনেন কি না?


মনিন্দ্রমোহন তখন পুলিশকে জানান, তাঁরা কয়েক দিন আগে মোটরপার্টস কিনতে এই দোকানে এসেছিলেন।


উল্লেখ্য, যেই গাড়িতে করে গাজীপুরে জঙ্গলে মামুনের লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই গাড়িতেই এসব মোটরপার্টস লাগানো হয়েছিল।


এ মামলার আসামিরা হলেন—রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হাসান ও দিদার পাঠান। তাঁরা কারাগারে রয়েছেন। সাক্ষী জবানবন্দি দেওয়ার পর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে তাঁদের পক্ষে জেরা করা হয়। পরে আগামী ২৫ জুলাই পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়।


এ মামলার আসামিদের মধ্যে আরাভ খান ও তাঁর স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া পলাতক রয়েছেন। রবিউল ইসলাম এখন আরাভ খান নাম ধারণ করে দুবাইয়ে আছেন। সম্প্রতি অভিজাত জুয়েলারি দোকান উদ্বোধন করে আলোচনায় এসেছেন। সম্প্রতি একটি অস্ত্র মামলায় তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল।


এর আগে ২১ মার্চ এ মামলায় নিহত মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষ্য দেন। এ পর্যন্ত ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। কারাগার থেকে ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাদের আবারও কারাগারে পাঠানো হয়।


নিহত পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান ওরফে মামুন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। মামুনকে ২০১৮ সালের ৮ জুলাই দিন দিবাগত রাতে রাজধানীর বনানী মডেল টাউনের রোড নম্বর ২ / ৩ বাড়ি নম্বর-৫ অ্যাপার্টমেন্টের দ্বিতীয় তলায় খুন করা হয়। পরে লাশ গুম করার জন্য দুর্বৃত্তরা গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার উলুখোলা রাস্তার পাশে ঝাড়ের মধ্যে পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে রাখে। পরে ১০ জুলাই কালিগঞ্জ থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বনানী থানায় ১০ জুলাই হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৯ সালে হত্যা মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে ডিবি পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে।


হত্যায় সহযোগিতার কারণে আইনের সংস্পর্শে আসা কিশোরী মেহেরুন্নিসা স্বর্ণা ও ফারিয়া বিনতে মিমের বিরুদ্ধে দোষীপত্র দেওয়া হয়। এই দুজনের বিচার করার জন্য ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ দোষীপত্রটি পাঠানো হয়।


শেয়ার করুন