২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৪:২২:১৩ অপরাহ্ন
দুর্গাপুরে রাষ্ট্রীয় সম্পদ গায়েব করে দাপট দেখিয়ে যুবলীগ নেতার কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৭-২০২৩
দুর্গাপুরে রাষ্ট্রীয় সম্পদ গায়েব করে দাপট দেখিয়ে যুবলীগ নেতার কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর  ইউনিয়নের মহম্মদপুরে অবৈধ পুকুর খননের জন্য  ফসলের মাঠ দখলে নিয়েছে বাগমারার তাহেরপুর পৌর যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আসাদ। 

কৃষি জমিতে দাপট দেখিয়ে বিদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে পুকুর খননের কাজ। কৃষিতে এমন ধ্বংস লীলা চালিয়ে গেলেও প্রশাসনের নির্বিকার ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রান্তিক কৃষকদের ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করতে গণভবনে পড়ে থাকে অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কৃষকদের নিয়ে এমন চিন্তা ধারায় ইতোমধ্যে প্রসংশিত হয়েছেন দেশবাসির কাছে। মাননীয়  প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, আমি নিজেও কৃষি কাজ করছি, গণভবন এখন খামারবাড়ি’। কৃষকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন না করে  প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা আসাদ সেই স্বপ্নকে ফি'কে দিচ্ছেন নিজের আখের গোজাতে। তার এই অবৈধ পুকুর খননের কাজে যোগসাজশ রয়েছে  স্থানীয় প্রশাসনেরও। প্রভাবশালী আসাদ স্থানীয় কৃষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে দিন-রাত সমান তালে কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করছে। এছাড়া  নকশায় বর্ণিত রাষ্ট্রের সম্পদ প্রাচীন সিমানা পিলার গায়েব করার পরিকল্পনা নিয়ে এই পুকুর খনন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আসাদের সাথে রাষ্ট্রের এই সম্পদ গায়েব করার পরিকল্পনায় যোগ দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী আজিজুল ও সোহেল নামের দুই ব্যাক্তি। যুবলীগ নেতার কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধসহ রাষ্ট্রীয় সম্পদ প্রাচীন সিমানা পিলার চুরির আশঙ্কা প্রকাশ করে ব্যবস্থা নিতে এলাকাবাসির পক্ষে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,  উপজেলার মহম্মাদপুর মাগুরার বিলে প্রায় ৭০-৮০ বিঘা জমির উপর পুকুর খনন কাজ চলছে। ওই পুকুর খনন করলে গোটিয়ার বিল মিলে প্রায় ২০০/ ২৫০ বিঘা জমি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে অনাবাদী হয়ে যাবে। পুকুরটি পুঠিয়া থানার ডাঙ্গাপাড়া মৌজার ১৭৫ দাগসহ দুর্গাপুরের মহাম্মদপুর ও বিয়াড় মৌজার জমি নিয়ে চলছে খনন কাজ। ডাঙ্গাপাড়ার পাকা রাস্তাটি  ভেকুমেশিন ও মাটি বহনকারী ট্রাক্টর চলাচলের কারনে ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। ডাঙ্গাপাড়া, মোহাম্মদপুর ও বিয়াড় এই তিন সীমানায় বাংলাদেশ সরকারের রেভিনিউ সার্ভে অনুযায়ী একটি অতি মূল্যবান প্রাচীন সীমানা পিলার রয়েছে যাহা রাষ্ট্রীয় সম্পদ নামে বিবেচিত। এটি চুরির আশু সম্ভাবনা রয়েছে। অতি দ্রুততম সময়ে ফসলের জমি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার্থে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ভেকুমেশিনের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যাবার পর দেখি তারা রাস্তা নষ্ট করে আরো ভেকু নিয়ে যাচ্ছে পরে এসে আমরা গ্রামবাসী নিষেধ করলে উল্টো তারা আমাদের হুমকি দিচ্ছে। এই পুকুর খনন করা হলে বহু আবাদি জমি নষ্ট হয়ে যাবে আমরা এর প্রতিকার চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন মহম্মদপুর বিলে পুকুর খনন করা হলে বাদ বাকি অন্য ফসলি জমিগুলো সব পতিত আর অনাবাদি হয়ে পড়বে। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধ হয়ে পড়বে। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থাও নাই। স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ পুকুর খনন কারীদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে ফসলি জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করছেন না। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠ জুড়ে গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন ফসলের গাছ। পাশেই প্রভাবশালী আসাদ করছেন অবৈধ পুকুর খনন। খননের মাটি বহন করা হচ্ছে অনুমোদনহীন ট্রাক্টর দিয়ে। ধারন ক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের কারনে গ্রামীন রাস্তাটি দেবে গিয়ে খানাখন্দে পরিনত হয়েছে। যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। আরেক ভুক্তভোগী কৃষক বলেন, যুবলীগ নেতা আসাদ এলাকার আজিজুল ও সোহেল (ছোট) কে নিয়ে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে পুকুর খনন করছেন। সরকারিভাবে কৃষি জমিতে পুকুর খনন নিষেধাজ্ঞাতো রয়েছে। তবে  সরকারী দলের প্রভাব খাটিয়ে পুকুর খনন হচ্ছে বলে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সোহেল রানার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনিসুল ইসলাম বলেন,  বিস্তারিত তথ্য দেন। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


শেয়ার করুন