২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ১২:৩৪:৫৯ পূর্বাহ্ন
ছয় দফার প্রণয়ক বঙ্গবন্ধু নিজেই: প্রধানমন্ত্রী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৬-২০২২
ছয় দফার প্রণয়ক বঙ্গবন্ধু নিজেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ-বঞ্চনা থেকে বাংলার জনগণকে মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার জীবনের লক্ষ্যই ছিল বাংলার জনগণকে এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেওয়া। 

তিনি বলেন, সব সময়ই বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্ক্ষা ছিল বাঙালি জাতিগোষ্ঠীকে একটি মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। 

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ছয় দফা নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। ছয় দফার প্রণয়ক বঙ্গবন্ধু নিজেই। তিনি তখন আলফা ইন্সুরেন্সে চাকরি করতেন। হানিফ সাহেব তখন বিএ পাস করেছেন। তাকে নিয়ে আসেন জাতির পিতা। বঙ্গবন্ধু যখন বলতেন তখন হানিফ সাহেব ছয় দফা ড্রাফট করতেন। ছয় দফা সম্পর্কে জানলে শুধু জানতেন হানিফ। কারণ তিনিই এই ছয় দফা বাংলা ও ইংরেজিতে টাইপ করে দিয়েছিলেন।

ঐতিহাসিক ৬ দফার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চলে আসলে জনগণের অধিকার ছিল না। পাকিস্তান রাষ্ট্র হওয়ার পরে কোনো শাসনতন্ত্র, সংবিধান দিতে পারেনি। সব সময় বঞ্চনার শিকার হতে হতো। জনসংখ্যার দিক থেকে পূর্ব পাকিস্তানে জনসংখ্যা বেশি। পশ্চিম পাকিস্তানে ছিল আমাদের থেকে অনেক কম। তারপরও দেখা গেল রাজধানী নিয়ে যাওয়া হলো করাচিতে। সেই মরুভূমি করাচিতে ফুল ফোটানো হলে বাংলাদেশের অর্থ দিয়ে। শোষণ-বঞ্চণা এবং আমাদের ওপর বারবার যে আঘাত, তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
 
শেখ হাসিনা বলেন, ছয় দফা দাবি ছিল দেশের স্বাধীনতার জন্য জনগণকে পুরোপুরি প্রস্তুত করা এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পক্ষে জনগণকে প্রস্তুত করা। প্রকৃতপক্ষে, এটি  ছিল ‘ম্যাগনা কার্টা’ যার মাধ্যমে দেশের মানুষ নিজেদের স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছিল। আর ১৯৭০ এর নির্বাচন ও এই ৬ দফার ভিত্তিতেই হয়। সেখান থেকেই আমরা এক দফায় চলে এসে স্বাধীনতা অর্জন করেছি এবং ৬ দফা কিন্তু মনু মিয়াদের রক্ত দিয়েই রক্তের অক্ষরে লিখে দেয়া হয়। 

শেখ হাসিনা বলেন, এই ৬ দফা মূলত এক দফাই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য। যেটা জাতির পিতা ইশারায় দেখাতেন এক হাতের পাঞ্জা এবং আর এক হাতের তর্জনি প্রদর্শন করে এবং আবার তর্জনির ওপর জোর দিতেন অর্থাৎ আসলে এক দফা।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে ছয় দফা দাবি আদায়ে, পঁচাত্তরের ১৫ আগষ্টের শহিদ এবং অন্যান্য গণ আন্দোলনের শহিদসহ সীতাকুন্ড কন্টেইনার ডিপোর অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। 

সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গণভবন থেকে সভা সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। 

এসময় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ঢাকা উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদককে বক্তব্য দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হলেও তারা বক্তব্য না দিয়ে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনার আগ্রহের কথা জানান। পরে বক্তব্য শুরু করেন শেখ হাসিনা।

শেয়ার করুন