২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০২:২৬:৫৩ অপরাহ্ন
তারুণ্যের জয়যাত্রার বদলে ঢাকায় শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের ৩ সংগঠন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৭-২০২৩
তারুণ্যের জয়যাত্রার বদলে ঢাকায় শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের ৩ সংগঠন

রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আগামী বৃহস্পতিবার তারুণ্যের জয়যাত্রার সমাবেশ ডেকেছিল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর বিএনপি হামলা করছে দাবি করে এ কর্মসূচির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এবার ক্ষমতাসীনদের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ আয়োজনে এই সমাবেশ হবে।


আজ সোমবার এ নিয়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিন সংগঠন। এতে জানানো হয়, আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে নেতা-কর্মীরা জড়ো হবে, ১টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বেলা ৩টা থেকে সমাবেশ শুরু হবে।


 ২২ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশ থেকে ২৭ জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। অন্যদিকে আজ সোমবার বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ-পশ্চিম গেটে তারুণ্যের জয়যাত্রার সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল যুবলীগ। তবে সেই সিদ্ধান্ত রোববারই পরিবর্তন করে সংগঠনটি। জানানো হয়, বৃহস্পতিবারই এ কর্মসূচি পালন করবে যুবলীগ, যেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।


এদিকে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীতে বিএনপির কর্মসূচির দিন শান্তি সমাবেশের নামে পাল্টা কর্মসূচি পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। এত দিন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। ২২ জুলাই প্রথম যুবলীগ আলাদা কর্মসূচি পালন করে। ওই দিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজ জেলা নোয়াখালীতে শান্তি সমাবেশে ছিলেন।


বিএনপির সমাবেশের পাল্টা সমাবেশ করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। রাজনৈতিক দল হিসেবে সহাবস্থানে থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করব।’ 

সাপ্তাহিক কর্মব্যস্ত দিনে দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি স্থান জানালাম। পরবর্তী সময়ে স্পট পরিবর্তন করতে পারি।’


এর আগে লিখিত বক্তব্যে মাঈনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এই বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হবে। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে দেশবিরোধী চক্র, প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। অগ্নিহত্যার ড্রেস রিহার্সাল হিসেবে তারা ঢাকা শহরের অন্যতম বিদ্যাপীঠ বাংলা কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে জ্ঞানের আলো লাইব্রেরি ভাঙচুরসহ ছাত্রীদের ওপর হামলা ও শ্লীলতাহানি করে। যার ধারাবাহিকতায় বগুড়ায় একই দিনে ইয়াকুবিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে হামলা করে শতাধিক ছাত্রীকে আহত করে। খাগড়াছড়ি ও লক্ষ্মীপুরে শান্তি সমাবেশে হামলা করে শতাধিক মানুষকে আহত করে।’


তিনি আরও বলেন, ‘২১ জুলাই যুবলীগের খুলনা বিভাগীয় ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নড়াইলের পেরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আজাদ শেখকে ওৎপেতে থাকা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্ঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে এবং একই দিনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ১২ ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা শেখ ওয়ালিউল্লাহ রুবেলকে হত্যা করে। গত ৩০ এপ্রিল তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জামাল হোসেন এবং গত ৩০ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি আলাউদ্দিন পাটোয়ারীকে নির্মমভাবে হত্যা করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা।’


সংবাদ সম্মেলনে নিখিল বলেন, ‘গত ২৫ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান ও যুবলীগ নেতা রাকিব ইমামের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও বিএনপি-জামায়াতের সম্পৃক্ততা রয়েছে। গত ২১ জুন কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভা শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইফতেখার অনিক বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলায় নিহত হন।’


যুবলীগের এই নেতা বলেন, ‘ইতিপূর্বে বগুড়া শহর শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাহিদ হাসান ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. রমজান আলীকে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে। এটা নতুন কিছু নয়। এটা জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপির পরিষ্কার চিত্র। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর হাজার হাজার সামরিক-বেসামরিক মানুষকে গুম-হত্যা করে ক্ষমতাকে সুসংহত করেন।’


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক অফজালুর রহমান বাবু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।


শেয়ার করুন