২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১০:০৬:৪১ অপরাহ্ন
‘দম বন্ধ লাগে, চিৎকার করি’
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৮-২০২৩
‘দম বন্ধ লাগে, চিৎকার করি’

কাবুলে একটি রেস্তোরাঁ ছিল লায়লা হায়দারির (৪৪)। সেখানে সন্ধ্যায় সংগীত ও কবিতাপাঠের আসর বসত। বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাংবাদিক ও বিদেশিদের কাছে জায়গাটি জনপ্রিয় ছিল। ব্যবসার আয়ের একটি অংশ দিয়ে মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি।


তবে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর সেটি ভেঙে ফেলেন তাদের সমর্থকেরা। ওই ঘটনার পাঁচ মাস পর গোপনে একটি হ্যান্ডিক্রাফট সেন্টার খোলেন হায়দারি। সেখানে পোশাক তৈরি ও অলংকার বানিয়ে টাকা আয় করছেন প্রায় ৫০ জন নারী। হায়দারি বলেন, ‘যে নারীদের কাজ খুব দরকার তাঁদের জন্য আমি এই প্রতিষ্ঠান শুরু করেছি।’ খবর ডয়চে ভেলের।


নারীদের জন্য বেশির ভাগ চাকরি নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। মেয়েরা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা নিতে পারছে না। মেয়েদের চলাফেরার ওপরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।


তবে হাজার হাজার নারী তাঁদের বাড়িতে ছোট ব্যবসা শুরু করেছেন। এতে সাধারণত বাধা দিচ্ছে না তালেবান। পাশাপাশি হায়দারির মতো গোপন প্রতিষ্ঠানও কাজ করে যাচ্ছে।


২৫ বছর বয়সী ওয়াজিহা শেখাওয়াত দরজির কাজ জানেন। আগে তিনি একা পাকিস্তান ও ইরানে গিয়ে কাপড় কিনে আনতেন। তালেবানের আরোপ করা নিয়ম অনুযায়ী, এখন তিনি একা ভ্রমণ করতে পারেন না। কিন্তু সঙ্গে একজনকে নিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে আর্থিক কারণে সম্ভব নয়। এ অবস্থায় তিনি তাঁর পরিবারের এক পুরুষ সদস্যকে কাপড় কিনতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ভুল কাপড় কিনে আনেন।


ওয়াজিহা বলেন, ‘ব্যবসাসংক্রান্ত কাজে আমি আগে নিয়মিত বিদেশে যেতাম, কিন্তু এখন কফি পান করতেও বাইরে যেতে পারি না। দম বন্ধ লাগে। মাঝেমধ্যে আমি ঘর বন্ধ করে চিৎকার করি।’


এদিকে, পার্টি ড্রেস ও চাকরিজীবী মেয়েদের পোশাকের চাহিদা কমে যাওয়ায় ওয়াজিহার মাসিক আয় ৬০০ থেকে কমে ২০০ ডলার হয়েছে।


আফগানিস্তানে বিধবা, বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া ও একা থাকা নারীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। তাঁদের অনেকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। আবার অনেকের মাহরাম (সঙ্গে যাওয়ার মতো পুরুষসঙ্গী) কেউ নেই। 


শেয়ার করুন