০৭ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ০৩:১৯:৪৯ অপরাহ্ন
সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করবে ইসি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৮-২০২৩
সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করবে ইসি

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা পর্যবেক্ষণ করতে চায় তাদের জন্য যাতে সহায়ক হয় এমন পর্যবেক্ষক নীতিমালা করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী মাসের সেপ্টেম্বরে প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করতে চায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। 


আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। বেলা ১১টা কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের সভাপতিত্বে বৈঠকটি প্রায় দেড় ঘণ্টা অনুষ্ঠিত হয়। 


বৈঠক শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা নিয়ে আজকে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আমাদের আরও সভা করতে হবে। আজকে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনবিআর, তথ্য মন্ত্রণালয়সহ সভা করেছি। আজকের সভায় কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আমাদের বর্তমান যে নীতিমালাটি আছে সেটি পর্যালোচনা করেছি। কোন কোন পয়েন্ট যুগোপযোগী করা প্রয়োজন তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আগামী সপ্তাহে আমরা আবারও বসব। আরও দু-একটি সভা করে আমরা খসড়া চূড়ান্ত করে কমিশনে উপস্থাপন করব। কমিশন অনুমোদন দিলেই সেটি চূড়ান্ত হবে। 


সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার বলেন, আমরা নীতিমালাটি এমনভাবে করছি যাতে, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য সহায়ক হয়, ব্যবহার বান্ধব হয়। 


নীতিমালার কয়টি জায়গায় পরিবর্তন আসতে পারে— জানতে চাইলে অশোক কুমার বলেন, ‘এই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আমরা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে খসড়া চূড়ান্ত করতে পারব। এটা চূড়ান্ত হওয়ার পরে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি যাবে। তারা আবেদন করবে। আবেদন অনুযায়ী যে পদ্ধতি থাকবে সে অনুযায়ী অনুমোদন পেয়ে তারা পর্যবেক্ষক হিসেবে আসতে পারবে।’ 


জানা যায়, সভায় ভোট পর্যবেক্ষণে আসার বিদেশিদের আবেদন সীমা, প্রয়োজনীয় কারিগরি সুযোগ-সুবিধা ও প্রাক নির্বাচনী একটি প্রতিনিধি দলের সুপারিশ পর্যালোচনা করে নীতিমালা হালনাগাদের বিষয় আলোচনা করা হয়। 


ইতিমধ্যে ইইউ প্রতিনিধিরা কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে পর্যবেক্ষকদের কিছু যন্ত্রপাতি আনা এবং ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয়ে সুপারিশ করেছে। সে ক্ষেত্রে তাদের সুবিধার্থে নীতিমালায় কি যুক্ত করা যায়, এ বিষয়ে এনবিআরের মতামত এবং আবেদনের প্রক্রিয়া কবে নাগাদ শুরু করা যায়, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়। 


জানা যায়, একাদশ ও দশম সংসদ নির্বাচনে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ৮১টি দেশি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯০০ জন প্রতিনিধি। এছাড়া ৩৮ জন (ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত) বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা এবং দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ৬১ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করে। দশম সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়ায় পর্যবেক্ষকও কম ছিল। ওই নির্বাচনে মাত্র ৪ জন বিদেশি এবং স্থানীয় ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। এর আগে নবম সংসদ নির্বাচনে ৫৯৩ জন বিদেশি এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন দেশি; অষ্টম সংসদে ২২৫ জন বিদেশি এবং ২ লাখ ১৮ হাজার জন দেশি; সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ২৬৫ জন বিদেশি ও প্রায় ৪০ হাজার দেশি; ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে ৫৯ জন বিদেশি এবং ৩০ হাজারের মতো দেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। 


চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে চায় ইসি। নভেম্বরে তফসিল ঘোষণার আভাসও রয়েছে।


শেয়ার করুন