২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ১২:৪৭:০২ পূর্বাহ্ন
সুজানগরে ৩টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসা নৌকা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৯-২০২৩
সুজানগরে ৩টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসা নৌকা

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া আশা করছেন পাবনার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলের শিশু শিক্ষার্থীরা। ছোট্ট একেকটি নৌকায় ০৮-১২ জন করে শিক্ষার্থী উঠেন। তাদের বিদ্যালয়ের আশা-যাওয়ার একমাত্র ভরসাই নৌকা।


বর্ষা মৌসুমে গাজনার বিল অধ্যুষিত সুজানগর উপজেলার ৩ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারদিকে থৈ থৈ পানি। তবুও চলছে পাঠদান। তাই কোমলমতি প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থীর স্কুলে যাওয়ার জন্য নৌকাই একমাত্র ভরসা।


সুজানগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাণীনগর ইউনিয়নের ১৮ নং শারীরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৪১ নং বস্তাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুলাই ইউনিয়নের ১৩৪ নং পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শতাধিক শিক্ষার্থীকে নৌকায় পারাপার করতে হয়।


আর এজন্য প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় চলাকালীন প্রতিদিন ১০-২০ টাকা করে ভাড়ার নৌকায় চলাচল করতে হয়। কিছু শিক্ষার্থীকে অভিভাবকেরা তাদের নিজ নিজ সন্তানকে নিজস্ব নৌকায় করে বিদ্যালয়ে আনা-নেয়া করে থাকেন আবার অনেক শিক্ষার্থী নিজেরাই ছোট্ট নৌকা চালিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে করেন।


শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, প্রত্যন্ত গাজনার বিলে অবস্থিত এ তিনটি বিদ্যালয়ের শিশুদের যাতায়াতের এমন করুণ অবস্থা কয়েক যুগ ধরেই। ঝড় বৃষ্টি উপক্ষো করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মাথায় নিয়েই কোমলমতি শিশুরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে থাকেন।


তবে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে তিনটি বিদ্যালয়ে ৩টি নৌকার ব্যবস্থা করলে বর্ষার শুরু থেকে পানি শুকানো পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার অনেক সুবিধা হবে।


বস্তাল সরকারি প্রাথকি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসান ও শারীরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসমা খাতুন জানায়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভয়ে ভয়ে আমাদের নৌকায় চলাচল করতে হয়, মাঝের মধ্যেই নৌকায় উঠানামা করতে গিয়ে পা ফসকে পানিতে পড়ে বই-খাতা নষ্ট হয়। পোশাকও ভিজে যায়।


আমাদের খুব কষ্ট হয়। বস্তাল সরকারি প্রাথকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক(চলতি দায়িত্ব) মমিন উদ্দিন ও শারীরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, (জুলাই-নভেম্বর) প্রায় ৫ মাস গাজনার বিলে পানি থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। অনেক সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেন।


উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল জব্বার রবিবার জানান,উপজেলার শারীরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,বস্তাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রত্যন্ত বিল অঞ্চেলের মধ্যে অবস্থিত। ছোট্ট নৌকায় চরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে থাকেন এ অঞ্চলের খুদে শিক্ষার্থীরা।


উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, ওই তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে পারে এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনের সাথে পরামর্শ করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন