২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:০৫:৫৪ অপরাহ্ন
নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে বিদেশি হস্তক্ষেপ জনগণ মানবে না: শেখ হাসিনা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৯-২০২৩
নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে বিদেশি হস্তক্ষেপ জনগণ মানবে না: শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে এমনকি বিদেশ থেকেও যদি কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হয়, দেশের জনগণ তা মেনে নেবে না।’ নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।


জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর নিউইয়র্ক সফর সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।


আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসী ভোট দিলে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু বিদেশ থেকেও নির্বাচন বানচালের কোনো পদক্ষেপ জনগণ মেনে নেবে না।’ 


প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর দল সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে। তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালের কোনো পদক্ষেপের ক্ষেত্রে যারা উদ্যোগ নেবে, বাংলাদেশের জনগণ তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।


নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আশা করেন, বিরোধী দলসহ নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টাকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।


শেখ হাসিনা বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এটা ভালো হবে, কারণ বিএনপি জোট ২০১৩-১৪ সালের মতো নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে কোনো অগ্নিসংযোগ করতে পারবে না। 


সরকারপ্রধান আশা প্রকাশ করেন, যে দেশ ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তারা উভয় পক্ষ থেকে বা নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি বিবেচনা করবে। 


তিনি বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগকে টার্গেট করলে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ কারও শক্তির ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় আসেনি। আমি জনগণের শক্তি এবং তাদের ভোটে ক্ষমতায় এসেছি।’ 


আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, তারা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কে নিষেধাজ্ঞা দেবে বা দেবে না, তা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। শেখ হাসিনা বলেন, যারা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে, তাদের দেশের নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 


প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বারবার তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। তা সত্ত্বেও সরকারপ্রধান হিসেবে তার ওপর অর্পিত ক্ষমতা ব্যবহার করে তিনি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড স্থগিত করে বাড়িতে থাকার এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। 


তিনি বলেন, তাঁর সরকার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) আওতা থেকে বের করে এনে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য প্রথম আইন প্রণয়নের পাশাপাশি তাদের সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিয়েছে। 


তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তারা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রবর্তনের প্রস্তাব করেছেন। 


এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, খালেদা জিয়া নির্বাচনে কারচুপির জন্য ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার যুক্ত করেছিলেন। 


প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে উপনির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ অসংখ্য নির্বাচন করেছে, যেখানে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।


তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে কেউ ক্ষমতায় আসতে চাইলে তাদের সংকটের মুখোমুখি হতে হবে। 


যারা বিশৃঙ্খলা বা দেশের সংবিধান লঙ্ঘনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করতে চায়, তাদের ব্যাপারে তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের কোনো সুযোগ নেই।’


দুর্নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যাপক দুর্নীতি থাকলে বাংলাদেশ বিশাল উন্নয়নের রোল মডেল হতে পারত না।


শেখ হাসিনা বলেন, সরকার শুধু মেগা প্রকল্পই তৈরি করেনি, উন্নয়নকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো অপপ্রচারে কান দেবেন না।


সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘কিছু লোক আছে যারা দেশের কল্যাণ চায় না। প্রবাসীরা সচেতন থাকলে এই স্বার্থান্বেষী মহল সফল হতে পারবে না।’ প্রধানমন্ত্রী এ লক্ষ্যে অপপ্রচারকে অস্বীকার করে যথাযথ উপায়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান।


শেয়ার করুন