০১ মে ২০২৪, বুধবার, ০৬:৪১:৫৪ পূর্বাহ্ন
গোপন তথ্যভান্ডারে অবৈধ সংযোগ
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৩-২০২৪
গোপন তথ্যভান্ডারে অবৈধ সংযোগ

শেয়ারবাজারের সবচেয়ে স্পর্শকাতর এবং অত্যন্ত গোপনীয় তথ্যভান্ডার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারি সফটওয়্যার) অবৈধ সংযোগের তথ্য মিলেছে।

বিএসইসির ভেতরের একটি চক্র টানা ৭ বছর ধরে এ কাজ করে আসছে। নিয়ম লঙ্ঘন করে সার্ভেইল্যান্স এরিয়ার বাইরে সফটওয়্যারের সংযোগ স্থাপন করে কাজ করছে তারা।

এর সঙ্গে জড়িত আছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক শেখ মাহবুব উর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন কর্মকর্তার একটি চক্র। বিষয়টি ইতোমধ্যে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলেও রহস্যজনক কারণে তারা নীরব রয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, এখনো সংযোগই বন্ধ হয়নি।

যুগান্তরের নিজস্ব অনুসন্ধান ও বিএসইসির অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমন চঞ্চল্যকর তথ্য।

এসব ঘটনায় হতবাক বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, তথ্য পাচারের কারণে বড় অঙ্কের টাকা আয় হয়। এই টাকা দেশে থাকছে, নাকি দেশের বাইরে যাচ্ছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। তবে যার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

জানতে চাইলে শেখ মাহবুব উর রহমান শনিবার যুগান্তরকে বলেন, সংযোগটি আমি নেইনি। ২০১২ সাল থেকে যখন যে পরিচালক ছিলেন, তার রুমেই এই সংযোগ ছিল। সেখান থেকেই আমি পেয়েছি। ফলে অবৈধ বলার সুযোগ নেই।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এবং বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম শনিবার যুগান্তরকে বলেন, এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। শুধু বিএসইসি নয়, স্টক এক্সচেঞ্জের সার্ভেইল্যান্স থেকেও তথ্য পাচারের কথা শোনা যাচ্ছে। এখানে যাদের দায়িত্ব রয়েছে, তাদেরকে সক্রিয় হতে হবে। এর সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। পুঁজিবাজারের স্বার্থেই এ ব্যাপারে কঠোর হওয়া উচিত।

পাশাপাশি এর মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা আয় হয়। এই আয়ের টাকা দেশে থাকছে নাকি দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে সেটি খতিয়ে দেখা দরকার।

শেয়ারবাজারের সবচেয়ে স্পর্শকাতর সার্ভেইল্যান্স সফটওয়্যার বাজারের লেনদেন, নজরদারি এবং গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার গোপন তথ্যভান্ডার। এখানে দৈনন্দিন লেনদেন, কারা কিভাবে লেনদেন করছে, কে কোন শেয়ার কিনছে সে তথ্য থাকে। চারটি প্রতিষ্ঠানের সার্ভেইল্যান্স রয়েছে।

এগুলো হলো-বিএসইসি, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল)। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার বিএসইসির। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে লেনদেন মনিটরিং করা হয়।

এছাড়া সার্ভিল্যান্সের মাধ্যমে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে বিএসইসি। দীর্ঘদিন থেকে এই সার্ভেইল্যান্সের তথ্য বাইরে পাচারের অভিযোগ এসেছে। ২০১১ সালে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে সার্ভেইল্যান্স থেকে তথ্য পাচারের কথা বলা হয়।

ওই রিপোর্টে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিএসইসির কাছে সুপারিশ করা হয়। তবে ওই সময়ে বিএসইসির নিজস্ব সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম ছিল না।


শেয়ার করুন