২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:৩২:৩০ অপরাহ্ন
মিলের সোয়া চার কোটি টাকার চাল গায়েব
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-১০-২০২৩
মিলের সোয়া চার কোটি টাকার চাল গায়েব

সেনা কল্যাণ সংস্থার ডিলার পরিচয়ে চলতেন টোবেক্স এলপিজি ইউনিটের (টোবেক্স গ্রুপ) মালিক সরোয়ার হাসান। এই পরিচয়ে সেনা কল্যাণ সংস্থায় চাল সরবরাহ নিয়ে তিনি কথা বলেন জহুরা এগ্রিকালচার ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড অটো রাইস মিলসের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল হান্নানের সঙ্গে। হান্নানকে তিনি জানান, সেনা কল্যাণ সংস্থায় তার চাল সরবরাহের কার্যাদেশ আছে। এরপর আব্দুল হান্নানের সঙ্গে ২ হাজার ৪০০ টন চাল ক্রয়ের একটি চুক্তি করেন সরোয়ার। ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত চুক্তিতে থাকা ১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা মূল্যের পুরো চাল গ্রহণ করেন সরোয়ার। পরে জানা যায়, ডিলারশিপ ও ওয়ার্ক অর্ডার সবই ছিল ভুয়া। বাকিতে নেওয়া চার কোটি ২৪ লাখ টাকার চাল তিনি বাইরে বিক্রি করে পুরো অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এতে তাকে সহায়তা করেছেন আরও দুই রাইস মিলের মালিক।


এ ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলার তদন্ত এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অপর একটি মানি লন্ডারিং মামলা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।


সিআইডি জানায়, ভুক্তভোগী মো. আব্দুল হান্নান পরে জানতে পারেন সরোয়ার হাসান সেনা কল্যাণ সংস্থা থেকে চাল সরবরাহের কার্যাদেশ পাননি। প্রতারণামূলকভাবে সেনা কল্যাণ সংস্থার লোগো সংবলিত ব্যাগ বানিয়ে সেনা কল্যাণ ট্রাস্টের ভাড়াকৃত গাড়িতে ২ হাজার ৪০০ টন (৪৪ হাজার ৬০ বস্তা) চাল গ্রহণ করেছেন। তিনি আরও জানতে পারেন, সরোয়ার হাসান (৪০), নুহা অটো রাইস মিলের মালিক মো. আব্দুর রশিদ (৫৭) এবং মেসার্স অটো রাইস মিলসের মালিক মো. আনোয়ার হোসেনের (৪২) মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে চাল বাজারজাত করেছেন। তখন হান্নান বিষয়টি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে চাপ প্রয়োগ করে সরোয়ার হাসানের কাছ থেকে ২১ হাজার ৯৭৫ বস্তা চাল উদ্ধার করেন। কিন্তু অবশিষ্ট ২২ হাজার ৮৫ বস্তা চাল তিন রাইস মিলের মালিক বাজারে বিক্রি করে দেন। যার বাজার মূল্য ছিল ৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এই টাকা সরোয়ার হাসান পরিশোধ না করে, দেই-দিচ্ছি বলে ঘুরাতে থাকেন।


সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান যুগান্তরকে বলেন, প্রতারণার ঘটনায় ঢাকার আদালতে একটি সিআর মামলা হয়। সিআইডির তদন্তে আসামি সরোয়ার হাসানের বিরুদ্ধে সেনা কল্যাণ সংস্থার ডিলার না হয়েও নিজেকে ওই সংস্থার ডিলার পরিচয় দেওয়া এবং জালিয়াতির মাধ্যমে ওয়ার্ক অর্ডার তৈরির সত্যতা মেলে। সেনা কল্যাণ সংস্থার লোগো সংবলিত চাল অনুমোদন ছাড়া খোলাবাজারে বিক্রি করা যায় না জেনেও তা করার অপরাধের সত্যতা পাওয়া গেছে। তিন রাইস মিলসের মালিকের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি।


সিআইডি অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, আব্দুর রশিদ ও মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বাজারদর থেকে কমবেশি লাভে চালগুলো বাজারে বিক্রি করেন। এগুলোর লভ্যাংশ রেখে বিক্রয়লব্ধ চার কোটি ৩৬ লাখ ২৮ হাজার টাকা সরোয়ার হাসানকে দিয়েছেন।


শেয়ার করুন