০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার, ১২:১০:৫১ পূর্বাহ্ন
৮ কিলোমিটার দূর খড়খড়ড়ির সবজি রাজশাহী শহরে এসে কেজিতে ২৫ টাকা বেশি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-১০-২০২৩
৮ কিলোমিটার দূর খড়খড়ড়ির সবজি রাজশাহী শহরে এসে কেজিতে ২৫ টাকা বেশি

রাজশাহী পবা উপজেলার খড়খড়ি বাজারটি (হাট) কাঁচা সবজির জন্য বিখ্যাত। রাজশাহীর ৯টি উপজেলার মধ্যে পবা উপজেলাতে সবচেয়ে বেশি সবজি উৎপাদন হয়। এর সিংহভাগ বিক্রি হয় এই বাজারে। এই বাজার থেকে রাজশাহী শহরের দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। আর এখান থেকে প্রতিদিন সকালে সবজি বিক্রেতারা সবজি কিনে নিয়ে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন বাজারে গিয়ে খুচরা বিক্রি করেন। এছাড়াও এ বাজারের সবজি ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে যায়। আর সেই সবজি রাজশাহী শহরে মাত্র এক হাত ঘুরেই কেজিতে দাম বাড়ছে ১০-২৫ টাকা। কৃষকরা কৃষিতে লাভ করুক আর ক্ষতি করুক ব্যবসায়ীরা ঠিকই পকেটে লাভের টাকা ভরছেন পকেটে।


গতকাল বুধবার পবার খড়খড়ি বাজার ঘুরে কৃষক এবং পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মণ পটল এখানে পাইকারী গতকাল বিক্রি হয় সকালে দুই হাজার থেকে ২২শ’ টাকা। সেই পটল রাজশাহী শহরে গতকাল বিক্রি হয়েছে ৬৫-৭০ টাকা দরে। এতে কওে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। এক মণ করলা বিক্রি হয়েছে তিন হাজার থেকে তিন হাজার দুইশ টাকা মণ দরে। সেই হিসেবে এক কেজি করলার দাম পড়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা করে। কিন্তু সেটিই রাজশাহী শহরে বিক্রি হয়ে ৯০-১০০ টাকা কেজিতে। আবার বরবটি বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ১৮শ থেকে ২৫শ টাকা দরে। সেই হিসেবে প্রতিকেজি বরবটি কৃষক দাম পেয়েছেন সর্বোচ্চ ৬২ টাকা। কিন্তু সেটিই রাজশাহী শহরে বিক্রি হয়েছে। ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে।


এদিকে, রাজশাহী শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পবার বিদিরপুর বাজারেও পাইকারী দরে মনে এক থেকে ১৫০ টাকা কম বেশি দরে সবজি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সেই সবজি কিনে রাজশাহীর বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেছেন কেজিতে ১০ থেকে ২৫ টাকা বেশি দামে।


এ হাটের কৃষক আজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা খ্যাতে ফসল ফলাই (উৎপদান করি)। দাম পাই আর না পাই হাটে অ্যাসি বিক্রি করতেই হবি। এখুন একটু দাম প্যাচ্চি। তাই পটল বিক্রি করি কিছুটা লাভ হচ্চে। তার পরে সার বিষের যে দাম সবজি চাষ করে এখুন লাভ বার করা খুব কঠিন। যখন দাম পাবো না, তখুন ক্ষতি হবি। তাও ফসল তো আমাদের করতেই হবি। আমাদের লাভ হইলো না ক্ষতি হইলো, সেডা দেখার তো কেউ নাই। যারা আমারে কাছ থেকে জিনিস কিনি নিয়ে য্যায়ে অন্য যাগাত বিক্রি করতিছে, তাদের লাভ কিন্তু ঠিকিই হচ্চে।’


আরেক কৃষক নাজমুল হোসেন বলেন, ‘এবার শেষের দিকে এসে ভারি বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি ডুবে গেছে। এ কারণে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ কারণে সবজি এবার শীতে অনেক কম হচ্ছে। ফলে দাম বেশি পেলেও কৃষকরা খুব একটা লাভবান হচ্ছে না। তার পরেও আমার কাছ থ্যাকি জিনিস কিনি লিয়ে যাইয়ে রাজশাহী শহরেই কেজিতে কমপক্ষে ২০ টাকা লাভ করে বিক্রি হয়।’


রাজশাহীর তেরোখাদিয়া বাজারের সবজি বিক্রেতা আসগর আলী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন প্রাই ২০ কেজি সবজি বিক্রি করি। ভোরে উঠে বাজার থেকে সবজি কিনে নিয়ে এসে সারাদিনে বিক্রি করি। কখনো কখনো বিক্রি হয় না মাল থেকে যায়। পরের দিন বিক্রি করতে গেলে দাম কম পাওয়া যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। এর পরে আছে গাড়ি ভাড়া, দোকানের খাজনা। তাই প্রতিকেজি সবজি বিক্রি করি অন্তত ১০ টাকা লাভ না থাকলে আমার সংসার চলবে না। ২০০ কেজি সবজি বিক্রি করে গড়ে ১০ টাকা করে লাভ থাকলে দিন শেষে হাজার-বারোশ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারি।’


শেয়ার করুন