২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৬:২৯:২৮ অপরাহ্ন
বাড়িতে এমপি মুনসুরের টাকার বাঙ্কার, অভিযোগ দুদকে
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-১১-২০২৩
বাড়িতে এমপি মুনসুরের টাকার বাঙ্কার, অভিযোগ দুদকে

রাজশাহী -৫ আসনের এমপি সাবেক চিকিৎসক মুনসুর রহমানের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্কুল-কলেজ মাদ্রাসায় নিয়োগ, টিআর-কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়মের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা বাগিয়ে নিয়েছেন। আর সেই টাকা রাখতে এমপি মুনসুর রহমান বাড়িতে একটি টাকার বাঙ্কার গড়ে তুলেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন জেলার পুঠিয়া উপজেলার বাসিন্দা এক আইনজীবি। তাঁর নাম কবিরুল ইসলাম সূর্য। তিনি রাজশাহী বারের আইনজীবি। দুর্নীতি দমন কমিশন তার ওই অভিযোগের কপিটি গ্রহণও করেছেন।

দুদকে করা ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, এমপি মুনসুর রহমান বিগত পাঁচ বছরে এলাকার উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য করেছেন। ওএমএস, সার ডিলার নিয়োগ, কাবিখা-কাবিটার টাকা কমিশন নিয়েছেন। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্য, এমপিও করে দেওয়ার নামে অর্থ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য ও খাস পুকুরের লিজ দেয়াসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার বরপূত্র হয়েছেন। সেই টাকা রাখতে বাড়িতে অবৈধ টাকার বাঙ্কার (সিন্দুক) গড়ে তুলেছেন। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ব্যয় করার উদ্দেশ্যে গোপনে নিজ বাড়ির উত্তর-দক্ষিণ ওয়ালের গোপন সুড়ঙ্গে গুপ্ত সিন্দুকের অন্দর মহলের টেরা কোঠায় গচ্ছিত রাখা হয়েছে ওই টাকা।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, পুঠিয়ার চন্দনমাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা হতে এমপিও করে দেয়ার নামে ২০ লাখ, সাধনপুর উচ্চ বিদ্যালয় এ্যান্ড কলেজ এমপিও করার নামে ২০ লাখ, সাধনপুর পঙ্গু শিশু নিকেতন ডিগ্রী কলেজ এমপিও’র নামে ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন এমপি মুনসুর। এছাড়াও সাধনপুর পঙ্গু শিশু নিকেতন ডিগ্রী কলেজে ৪টি পদে নিয়োগ দিয়ে ৪৮ লাখ টাকা, সাধনপুর পঙ্গু ও শিশু নিকেতন হাইস্কুল হতে ৪টি পড়ে নিয়োগে ৩২ লাখ টাকা, অমৃতপাড়া দাখিল মাদ্রাসা ৩টি পদে নিয়োগ দিয়ে ২৪ লাখ টাকা, সাতবাড়িয়া দাখিল মাদ্রসায় ৩টি পড়ে নিয়োগ দিয়ে ২০ লাখ টাকা, সাতবাড়িয়া হাইস্কুলে ৩টি পদে নিয়োগ দিয়ে ২১ লাখ টাকা, পচামাড়িয়া ডিগ্রী কলেজে ৪টি পদে নিয়োগে ২২ লাখ টাকা, পচামাড়িয়া হাইস্কুলে ৪টিতে নিয়োগে ৪৮ লাখ টাকা, তেঁতুলিয়া হাইস্কুলে ৩টি পদে নিয়োগে ২০ লাখ টাকা নিয়েনে এমপি মুনসুর রহমান।

এছাড়াও পুঠিয়া ও দুর্গাপুরে প্রতিটি টিআর, কাবিটা-কাবিখা প্রকল্প থেকে শতকরা ৩০ ভাগ কমিশন আদায় করেছেন তিনি। অগ্রিম অর্থ নিয়ে নিয়ে প্রকল্প বরাদ্দ দেন। সরকারি বরাদ্দ থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাব মার্সেবল পানির পাম্পের জন্য ১০-১৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। খাস পুকুর অবৈধভাবে লিজ দিয়ে ইচ্ছেমতো অর্থ আদায় করেছেন এমপি।

এমপি অর্থ আত্মসাৎ করেই থেমে থাকেননি। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা হামলাসহ নানভাবে হয়রানি করেছেন। কখনো কখনো নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেছেন নেতাকর্মীদের নামে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি মুনসুর রহমান বলেন, ‘আগামীতে নির্বাচন। তাই দলের মধ্যে ঘাঁপটি মেরে থাকা কিছু কুচক্রি মহল এসব অভিযোগ করেছে বলে আমি জেনেছি। আদৌ এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নাই। আমার বাড়িতে কোনো টাকা রাখার সিন্দুক বা বাঙ্কার নাই। আমি প্রকল্পের নামে টাকাও লুটপাট করিনি।’

এমপি বলেন, ‘যেসব প্রতিষ্ঠ^ানে নিয়োগ হয়েছে, স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই হয়েছে। কোথাও কোনো হস্তক্ষেপ করিনি। কোনো অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে আমার জানা নাই।’

শেয়ার করুন