৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৫:১৯:১৩ অপরাহ্ন
নিরাপত্তা পরিষদের ম্যান্ডেট ছাড়া নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠায় না জাতিসংঘ: ডুজারিক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-১২-২০২৩
নিরাপত্তা পরিষদের ম্যান্ডেট ছাড়া নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠায় না জাতিসংঘ: ডুজারিক

নিরাপত্তা পরিষদের সুনির্দিষ্ট ম্যান্ডেট ছাড়া জাতিসংঘ কোনো দেশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠায় না। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।


গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মুখপাত্রের কার্যালয়ে এই ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গণতান্ত্রিক মিত্রদের থেকে সব ধরনের সহযোগিতাকে স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর পরিকল্পনা করছে কি না।’


জবাবে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘না, খুব সম্প্রতি...আমার যতটুকু মনে পড়ে, সুনির্দিষ্ট ম্যান্ডেট না থাকলে জাতিসংঘ আর পর্যবেক্ষক পাঠায় না।’


এর আগে গত ২৯ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র জানান, ২০১৫ সালের পর জাতিসংঘ আর কোনো দেশে পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। 


জাতিসংঘের নির্বাচনী সহায়তার নীতি বেশ জটিল। পর্যবেক্ষক পাঠানোসহ কোনো দেশকে নির্বাচনী সহায়তা দিতে চাইলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ম্যান্ডেট লাগবে। কোনো দেশ আনুষ্ঠানিক সহায়তা চাইলে মহাসচিবের অধীনে নির্বাচনী সহায়তার দপ্তর সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পর্যবেক্ষক পাঠানো বিরল ঘটনা।


সর্বশেষ ২০১৫ সালে বুরুন্ডিতে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছিল জাতিসংঘ। তার আগে ২০০১ সালে ফিজিতে পর্যবেক্ষণ দল পাঠানো হয়। 


এর মধ্যেই নির্বাচন ঘিরে জাতিসংঘ সচিবালয়, এর বিভিন্ন সংস্থা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তরের গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা চেয়ে সংস্থার মহাসচিবের দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। 


ওই চিঠিতে নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ বিশ্বের নানা প্রান্তের ‘অযথা, অযৌক্তিক, স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক চাপের’ মুখোমুখি হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।


বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের মহাসচিবকে পাঠানো চিঠি দেখেননি বলে জানান মুখপাত্র। তবে জাতিসংঘ বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করে বলে উল্লেখ করেন ডুজারিক। 


সংবাদ সম্মেলনে ওই সাংবাদিক আরেকটি প্রশ্ন করেন, ‘কনভেনশন অন দ্য প্রিভেনশন অ্যান্ড পানিশমেন্ট অব দ্য ক্রাইম অব জেনোসাইড এবং ইন্টারন্যাশনাল ডে অব কোমেমোরেশন অ্যান্ড ডিগনিটি অব দ্য ভিকটিমস অব দ্য ক্রাইম অব জেনোসাইডের ৭৫তম বর্ষপূর্তি পালন করবে জাতিসংঘ। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় দখলদার বাহিনী (পাকিস্তান) যে কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তাকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে এখনো পদক্ষেপ নেয়নি জাতিসংঘ। আমি এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানতে চাই।’


জবাবে ডুজারিক বলেন, ‘প্রথমত, এসব ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতি এবং এসব ঐতিহাসিক ঘটনায় যারা ভুক্তভোগী, তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান জানিয়ে বলছি, অনেক আগের এসব ঘটনা নিয়ে আমি মন্তব্য করব না। দ্বিতীয়ত, আমরা বারবারই বলেছি, কোনো ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কাজটি মহাসচিবের নয়। দায়িত্বটি উপযুক্ত বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের।’


ব্রিফিংয়ে আরেক সাংবাদিক স্টিফেন ডুজারিকের কাছে করা প্রশ্নে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সমর্থন চেয়ে, গণতান্ত্রিক ও ভোটাধিকারের জন্য জনগণের দাবিকে অযৌক্তিক বলে অভিহিত করে, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক চাপকে সাজানো বিষয় উল্লেখ করে মহাসচিবকে চিঠি দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন? বিরোধী দলের নেতাদের কারাগারে রেখে যে সরকার আরেকটি একতরফা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাকে কি মহাসচিব পুরস্কৃত করবেন?’


জবাবে ডুজারিক বলেন, ‘আমি চিঠিটি দেখিনি। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আমি শুধু আপনাকে এতটুকু বলতে পারি, যেটা আমি আগেও বিস্তারিতভাবে বলেছি—আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করি।’


শেয়ার করুন