২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:৪৯:১৪ অপরাহ্ন
আসনের ভাগ নিয়ে আ. লীগের শরিকদের ক্ষোভ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-১২-২০২৩
আসনের ভাগ নিয়ে আ. লীগের শরিকদের ক্ষোভ

টানা তিন নির্বাচনে নির্দিষ্ট কিছু আসনে শরিকদের ছাড় দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেসব আসনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর ভর করে নির্বাচনী বৈতরণি পার হয়েছিল জোটসঙ্গীরা। দলগুলোর সাংগঠনিক শক্তি না বাড়ায় দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে শরিকদের চাওয়া অনুযায়ী আসনে ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ। প্রধান দলের এই অনড় অবস্থানে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে জোটসঙ্গীদের। তবে তারা এখনো প্রকাশ্যে কিছু বলছে না।


বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আসন ভাগাভাগি নিয়ে জোটের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু আমাদের এক ধরনের কথা বলছেন; অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সকালে-বিকেলে আরেক ধরনের কথা বলছেন, এটা তো আমরা বুঝতে পারছি না।’


আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, জোট শরিকেরা অন্যের ওপর ভর করে নির্বাচিত হলেও নিজেদের সংগঠন শক্তিশালী করেনি। আবার তাদের ছাড় দেওয়ায় আওয়ামী লীগের সংগঠন গড়ে উঠছে না। এমন পরিস্থিতিতে গত তিনবারের মতো এবারও জোটের নেতাদের নৌকায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে অনীহা ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি শেখ হাসিনার।


গত ২৬ নভেম্বর ২৯৮ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে শরিক জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর (কুষ্টিয়া-২) ও জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমানের (নারায়ণগঞ্জ-৫) আসনে প্রার্থী দেয়নি দলটি। শরিকদের বাকি সাতটি আসনে প্রার্থী দেয় আওয়ামী লীগ; যা নিয়ে মনোমালিন্য তৈরি হয়েছিল জোটের মধ্যে।


৪ ডিসেম্বর শরিকদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় জোটগত এবং এককভাবে নির্বাচন করবে আওয়ামী লীগ।


আর ছাড় দেওয়া আসনে শরিকদের প্রার্থীরা নৌকায় নির্বাচন করবেন। আসন ভাগাভাগির বিষয়টি সমন্বয় করায় জন্য জোটের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। অন্যদিকে তিন মেয়াদেও শরিকদের সংগঠন শক্তিশালী না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।


জোটের এক নেতা বলেন, ‘পরিস্থিতি দেখে যা বুঝতে পারছি, আমরা আসন বেশি চাইলেও আওয়ামী লীগ ছাড় দেবে না। চার দলের চার নেতার আসন নিয়েই আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে। ওই সব আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে তারা নির্বাচন থেকে সরাবে না। এতে ছাড় দিলেও ভোটের বৈতরণি পার হতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে।’


৪ ডিসেম্বরের পর একাধিক বৈঠক হলেও আসন ভাগাভাগি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আওয়ামী লীগ বলছে, ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনেই ছাড় দেওয়া আসনের তালিকা শরিকদের দেবে।


আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলতে বদ্ধপরিকর দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। ফলে নানা রকম পরিকল্পনায় এগিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের। আর সব সময়ই সব চাওয়া পূরণ করা সম্ভব হয় না।’


তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বড় দল, তাদের অনেক সমীকরণ থাকতে পারে। তবে এটা পরিষ্কার, জোট একটাই হবে, সেটা হলো ১৪ দলীয় জোট, আর কোনো জোট হবে না। ছাড় দেওয়া আসনে আমরা নৌকায় নির্বাচন করব। সমন্বয়টা তাদের ব্যাপার।’


শেয়ার করুন