মারুফ সরকার,স্টাফ রির্পোটার: সিরাজগঞ্জে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে জেলা পরিষদের অস্থায়ী চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামের (তাজফুল) বিরুদ্ধে সমন্বয়হীনতা, নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অনাস্থার প্রস্তাব এনেছেন সদস্যরা। বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের কাছে ১০ জন সদস্য লিখিত এ প্রস্তাব দাখিল করেন।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস স্থানীয় সরকার বিভাগের নিয়মানুযায়ী পদত্যাগ করলে সেটি চলতি বছরের গত ২৯ নভেম্বর পদটি শূন্য ঘোষণা করে সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ন সচিব মোহাম্মদ সামছুল হক স্বাক্ষরিত ওই পত্রে জেলা পরিষদের অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে প্যানেল-১ নম্বর সদস্য শরিফুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তী ১৭ ডিসেম্বর চলমান প্রকল্পের অর্থ ছাড়ের অনুমতি দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। এরপর ১৯ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে ১১তম সভার আহবান করলে আওয়ামী লীগের বিজয় র্যালীর কথা বলে সদস্যরা অনুপস্থিত হয়।
জেলা পরিষদের অস্থায়ী চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমি জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ হওয়ায় আমার উপরে নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই অস্থায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব এসেছে। আর এ স্বল্প সময়ের দায়িত্ব পাবার পর জেলা পরিষদের সদস্য একরামুল হক আমার কাছ থেকে অনৈতিক কিছু সুবিধা দাবি করেন। কিন্তু আমি তাতে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি আমার উপর প্রতিহিংসার বসবতি হয়ে বর্তমান প্যানেল সদস্য-২ আমিনুল ইসলামকে দিয়ে একটি জরুরী সভা ডাকেন। সেই সভায় অন্য সদস্যদের বুঝে উঠার আগেই আমার বিরুদ্ধে এমন অনাস্থা প্রস্তাব করা হয়। তবে নিয়ম অনুযায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছাড়া এই ধরনের সভা আহ্বান করার কোন সুযোগ নেই।
সদস্য আমিনুল ইসলাম সভা আহবানের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সকল সদস্য আলোচনা করেই ওই সভা ডেকেছিলাম। সেখানে ১০ জন সদস্যের স্বাক্ষরে এই অনাস্থা প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংরক্ষিত নারী সদস্য কামরুন্নাহার আলো বলেন, সদস্য একরামুল হক মুঠোফোনে আমাকে ২১ ডিসেম্বর একটি সভায় আসতে বলেন। তবে কী কারনে ওই সভা ডাকা হচ্ছে সেটি জিজ্ঞাসা করলে একরামুল বলেন সভায় আসলেই বুঝতে পারবেন। পরে আমি সেই সভায় না যেতে পারায় আমাকে সভার কারণ না জানিয়েই রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর দিতে বললে আমি দেয়নি।
আরেক সদস্য গোলাম মোস্তাফা বলেন, কী বিষয়ে সভা ডাকা হয়েছে সেটি না জানতে পেরে আমি সভায় উপস্থিত হয়েছিলাম। তবে সে সভায় সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অস্থায়ী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলে সেখানে আমিসহ মোসলেম উদ্দিন নামের এক সদস্য এই প্রস্তাবের বিরোধীতা করলেও কোন লাভ হয়নি। স্বল্প বয়স্ক অন্য সদস্যদের চাপাচাপিতে আমরা বাধ্য হয়ে সেখানে স্বাক্ষর করেছি। এ অনাস্থার প্রস্তাবটি মূলত স্বল্প বয়স্ক সদস্যদের ক্ষমতার প্রতিহিংসার প্রতিফলন।
তবে জেলা পরিষদের সদস্য একরামুল হক অস্থায়ী চেয়ারম্যানের কাছে অনৈতিক সুবিধা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা আসলে শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে জেলা পরিষদের গাড়িটি তার ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার, সদস্যদের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয়হীনতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে এই অনাস্থার প্রস্তাব করেছি।